পরপর কামড়, কালু ও পাপাদের পুরসভা থেকে অন্যত্র সরানোর চিন্তা দক্ষিণ দমদমে
বর্তমান | ২০ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: পুরসভার অন্দরমহলে ‘কালু পাপা’কে দেখতে অভ্যস্ত শহরের বাসিন্দারা। ওদের আদর যত্নের কোনও ত্রুটি রাখেন না পুরকর্মীদের একাংশ। প্রতিদিন সকালে তাদের খেতে দেন কেক, বিস্কুট, রুটি। লাঞ্চে চিকেন। কালু পাপার কাজেকর্মে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হলেও ক্ষমা করে দেওয়ার রেওয়াজ আছে। ফলে স্নেহের প্রশ্রয়ে তাদের দাপট বেড়েছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে দৌরাত্ম মাত্রাছাড়া হয়ে উঠেছে। পুরসভার কর্মীদের পরপর কামড় দিয়ে ঝড় তুলে দিয়েছে কালু-পাপা। এবার তাদের অন্য কোথাও সরানোর ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। তাদের নিয়মিত যত্ন নিতেন এক কর্মী। পুরসভার সেই অস্থায়ী কর্মীকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার একতলার প্রবেশপথে পরপর রয়েছে অফিস, ক্যান্টিন ও লিফট। সেখানে সাতটি কুকুরের বিচরণ। সবথেকে বয়স্ক কুকুরটির নাম কালু পাপা। তার সঙ্গীর নাম লালি। তাদের সাতটি বাচ্চার মধ্যে দু’টি পথ দুর্ঘটনায় মারা যায়। বাকি পাঁচটির নাম দুষ্টু, ভদু বাচ্চা (মোটা), সুন্দরী, পচা ও ঘণ্টা। সবার ছোট হল ঘন্টা। সে এই দলের একমাত্র মদ্দা কুকুর। পুরসভার কর্মীদের যত্নে দেশি প্রজাতির এই কুকুরের চেহারা বিদেশি প্রজাতির ল্যাব্রাডরকেও দশ গোল দিতে পারে বলে অনেকের বক্তব্য। কুকুরগুলির মেজাজ সবসময় একরকম থাকে না। মানুষের যাতায়াতের রাস্তায় শুয়ে থাকা অবস্থায় তাদের লেজে বা পায়ে সামান্য ছোঁয়া লাগলে খ্যাঁক করে ওঠে। একবার অফিসের দরজা গলে ঢুকে বহু নথি নষ্ট করে দিয়েছিল। মাঝে পুরসভার গাড়ির তার কেটে দিয়েছিল। আগেও এই সাতটি কুকুরকে তাড়ানো নিয়ে পুরসভায় বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু পশুপ্রেমী কাউন্সিলার ও কর্মীদের স্নেহের প্রশ্রয়ে সব বেয়াদপি মাফও হয়ে যায়। তবে এবার পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার জনস্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মীকে কুকুর কামড়েছে। এছাড়া জলবিভাগের এক কর্মী সহ বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষকেও কামড়েছে কালু বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে সাতটি কুকুরকে অন্যত্র সরানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। তাদের প্রায় সন্তানস্নেহে যত্ন করা পুরসভার জেনারেল বিভাগের অস্থায়ী কর্মী অনুরাধা প্যাটেলকে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে। পশুপ্রেমী ও জল বিভাগের সিআইসি মৃন্ময় দাস বলেন, ‘পুরসভা থেকে কুকুর সরানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি বিকল্প প্রস্তাব হিসেবে অফিসটাইমে কুকুরগুলিকে খাঁচাবন্দি করে রাখা বা পাশের হাসপাতালের সামনের পার্কিংয়ে স্থানান্তর করার দাবি জানিয়েছি। কুকুরের যত্ন নেওয়া এক অস্থায়ী কর্মীকে পুরসভা থেকে সরানো হয়েছে। আমি তাঁকে ফের পুরসভায় ফিরিয়ে আনার অনুরোধ করেছি।’