• বড়জোড়া প্রকল্পের জল সরবরাহ বন্ধে দুর্ভোগে বাসিন্দারা, ক্ষোভ
    বর্তমান | ২০ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বৃহস্পতিবার দিনভর বাঁকুড়া শহরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের (পিএইচই) বড়জোড়া প্রকল্পের জল সরবরাহ বন্ধ ছিল। পিএইচই কর্তৃপক্ষ বাঁকুড়া পুরসভাকে অন্যান্য দিনের মতো এদিনও দেড় কোটি লিটার জল সরবরাহ করেছে বলে দাবি করেছে। যদিও বিকেলে সামান্য পরিমাণ বাদ দিলে দিনভর জল আসেনি বলে পুরকর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি। পিএইচই ও পুরসভার টানাপোড়েনে বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দাদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। নিম্নচাপের বৃষ্টির জেরে এমনিতেই শহরবাসীর নাজেহাল অবস্থা। তার উপর পানীয় জল না পেয়ে বাসিন্দারা বিরক্ত।  

    পিএইচই-র বাঁকুড়া ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ঋতম ভট্টাচার্য বলেন, দুর্গাপুর ব্যারাজের জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকল্পে জল উত্তোলনে কিছু সমস্যা হচ্ছে। তবে তার জেরে সরবরাহে খুব বেশি হলে ৫-১০ শতাংশ বিঘ্ন ঘটছে। এদিনও আমরা বাঁকুড়া পুরসভাকে দেড় কোটি লিটার পরিস্রুত পানীয় জল দিয়েছি। তা শহরে কেন সরবরাহ করা হয়নি, তা পুরসভা বলতে পারবে। 

    বাঁকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অলকা সেনমজুমদার বলেন, দুর্গাপুর ব্যারাজে কচুরিপানা জমে যাওয়ায় পিএইচই কর্তৃপক্ষ জল উত্তোলন করতে পারছে না। তার ছবি আমরা পিএইচই সূত্রে পেয়েছি। এদিন সকাল থেকে এক ফোঁটা জলও তারা আমাদের দিতে পারেনি। বিকেলে সরু সুতোর মতো জল পুরসভার রিজার্ভারে জমা হয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য। ওই জলে কোনও কাজ হয়নি। আজ, শুক্রবার সকালে পর্যাপ্ত জল না পাওয়া পর্যন্ত শহরে জল সরবরাহ করা সম্ভব নয়।

    বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা গীতা রজক, সুভাষ গোস্বামী বলেন, এদিন জল না পাওয়ায় সমস্যা হয়েছে। আজ, শুক্রবার থেকে যাতে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়, তারজন্য পিএইচই ও পুরসভাকে উদ্যোগ নিতে হবে।  

    উল্লেখ্য, বাঁকুড়া শহর ও সংলগ্ন ব্লক এলাকায় জল সরবরাহের জন্য বড়জোড়ার দেজুড়ি এলাকায় রাজ্য সরকার ‘জলধি’ জল প্রকল্প রূপায়ণ করেছিল। প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে ওই প্রকল্প চালু করা হয় বলে পিএইচই সূত্রে জানা গিয়েছে। তার ফলে বাঁকুড়ার পানীয় জল সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। দুর্গাপুর ব্যারাজের ইনটেক প্ল্যান্ট থেকে জল উত্তোলন করে দেজুড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওই জল শোধন(ট্রিটমেন্ট) করার পর সরবরাহ হয়। বাঁকুড়া শহর পর্যন্ত পিএইচই কর্তৃপক্ষ জল পৌঁছে দেয়। রিজার্ভার থেকে শহরের ২৪টি ওয়ার্ডে সরবরাহের দায়িত্ব বাঁকুড়া পুরসভার উপর ন্যস্ত রয়েছে। বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাজ্য সড়কের পাশ দিয়ে পানীয় জলের পাইপ পাতা হয়েছে। প্রকল্পে সমস্যার পাশাপাশি যানবাহনের চাকা ও জলের চাপে মাঝেমধ্যে পাইপ ফেটেও সরবরাহ বন্ধ হয়। তবে এদিন সরবরাহ বন্ধ নিয়ে দু’পক্ষের ভিন্ন দাবিতে সরকারি মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)