ময়নাগুড়িতে এটিএম লুটে ধৃতদের সঙ্গে রামনগরের ঘটনায় সংযোগ
বর্তমান | ২০ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে এটিএম থেকে ৫৪লক্ষ টাকা লুটের ঘটনায় চারজন ধরা পড়েছে। ধৃতদের তালিকায় দিল্লি পুলিসের বহিষ্কৃত কনস্টেবল সহ বিহার, হরিয়ানার যুবকরা রয়েছে। গত ১৩মে এই গ্যাংয়ের সদস্যরা রামনগর থানার বালিসাই ও দেউলিহাটে জোড়া এসবিআই এটিএম থেকে ৪০লক্ষ টাকা লুট করেছে বলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিস জানিয়েছে। ধৃতদের উত্তরবঙ্গের ওই জেলা থেকে রামনগর থানায় আনা হবে। রামনগর থানার পুলিস ময়নাগুড়ি থানার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। হেফাজতে নিয়ে তাদের জেরা করা হবে।
রামনগর থানার ওসি বুদ্ধদেব মাল বলেন, আমরা ময়নাগুড়ি থানার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। ওখানকার পুলিস এখন ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করছে। ওই পর্ব শেষ হলেই আমরা নিয়ে আসব।
জলের সঙ্গে মাছের সম্পর্কের মতোই সাইবার অপরাধের সঙ্গে জামতাড়া নামক জায়গাটি জড়িয়ে। অনুরূপভাবে এটিএম লুটের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে হরিয়ানার নুহতের। মাত্র ১০মিনিটে ম্যাজিকের মতো এটিএম মেশিন কেটে সব টাকা বের করে নিতে পারে প্রশিক্ষিতরা। পুলিস জানিয়েছে, স্কুল-কলেজের মতো নুহতে এটিএম মেশিন কাটার ক্লাস করানো হয়। এখান থেকে পাশ করে বেরনো ‘মাস্টার ট্রেনাররা’ বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে টিম গঠন করে। রামনগর থানায় এসবিআইয়ের দু’টি এটিএম কেটে টাকা বের করতে দুষ্কৃতীদের ১০মিনিট সময় লেগেছিল। হরিয়ানার প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনও অবস্থাতেই এত দ্রুত মেশিন কেটে টাকা বের করা সম্ভব নয় বলে পুলিসকর্তাদের দাবি। গত ১৩মে গভীর রাতে একটি প্রাইভেট গাড়িতে তিনজন এসে বালিসাই ও দেউলিহাটে পর পর দু’টি এটিএম কাটে। দু’টি এটিএম থেকে ১৫লক্ষ ও ২৫লক্ষ টাকা বের করে নেয় দুষ্কৃতীরা। অপারেশনের ২৪ঘণ্টা আগেই এটিএমে টাকা ভর্তি করা হয়েছিল।
চারদিন আগে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে দু’টি এটিএম লুটের ঘটনায় পুলিস চারজনকে গ্রেপ্তার করে। সেখানে ১০মিনিটে এক জায়গায় অবস্থিত দু’টি এটিএম কেটে মোট ৫৪লক্ষ টাকা বের করে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পুলিস চারজনকে গ্রেপ্তার করে ২৮লক্ষ টাকা উদ্ধার করে। ধৃতদের বাড়ি হরিয়ানা, বিহার ও দিল্লিতে। একজন বহিষ্কৃত কনস্টেবলও রয়েছে। ওই গ্যাংয়ের সদস্যরাই রামনগরে এটিএম লুট করেছে বলে নিশ্চিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিস। তাদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে। এজন্য রামনগর থানা থেকে তদন্তকারী অফিসার সহ একটি টিম ময়নাগুড়ি রওনা দেবে। ময়নাগুড়িতে চারজন গ্রেপ্তারের পর রাজ্যের বিভিন্ন থানার পুলিস প্রতিদিন সেখানে হাজির হচ্ছে। ওই গ্যাং আরও বিভিন্ন জায়গায় অপারেশন চালিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রতিটি জায়গার পুলিস তাদের হেফাজতে নিতে চায়।
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিস সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ময়নাগুড়ির ওই টিমের সদস্যরা রামনগরের এটিএম লুটের সঙ্গে যুক্ত। আমরা তাদের রামনগরে এনে জেরা করব।