• বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ, তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সঙ্কেত, গদাধরের বাঁধে ফাটল
    বর্তমান | ২০ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, দার্জিলিং: বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পাহাড় ও সমতল। কালিম্পং ও কার্শিয়াং পাহাড়ের একাধিক জায়গা ধস বিধ্বস্ত। এর জেরে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সহ গ্রামীণ রাস্তা, বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেল্লিতে তিস্তা নদীর খাদে স্কুটার নিয়ে পড়ে জখম হন দু’জন। বুধ ও বৃহস্পতিবারের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঘটনাগুলি ঘটেছে পাহাড়ে। এদিকে, সমতলে ফুঁসছে তিস্তা সহ ছ’টি নদী। ইতিমধ্যে মেখলিগঞ্জে তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় জারি করা হয়েছে হলুদ সঙ্কেত। একইসঙ্গে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের নিচু এলাকা, রাস্তার খানাখন্দে বৃষ্টির জল জমেছে। গাছ পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তা ও মন্দির। তুফানগঞ্জে গদাধর নদীর ছোবলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাঁধের ২০০ মিটার অংশ। 

    মিনি সচিবালয় উত্তরকন্যার বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরের এক কর্তা জানান, পাহাড় ও সমতলের পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে। ইতিমধ্যে পাহাড়ের রাস্তা থেকে ধস এবং সমতলে পড়ে যাওয়া গাছ কেটে সরানো হয়েছে। বুধবার কালিম্পংয়ের ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের মেল্লিতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি স্কুটার। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেল্লিতে রাস্তার ধারে স্কুটার নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন দু’জন। আচমকা মাটি ধসে তাঁরা তিস্তা নদীর খাদে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। কালিম্পং জেলা পুলিস জানিয়েছে, প্রথমে আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁদের শিলিগুড়িতে রেফার করা হয়েছে। 

    এদিকে, বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে কালিম্পংয়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই পাহাড়ি জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ ১০০ মিলিমিটার। এর জেরে কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের তিনটি জায়গা ফের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে লিকুভীর একটি। পাহাড় থেকে বোল্ডার পড়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলাকা। এর বাইরে মেল্লি ও কেরানে জাতীয় সড়কে ফাটল দেখা দিয়েছে। এর জেরে এদিন সকালে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলি দিয়ে কিছুক্ষণ যান চলাচল ব্যাহত হয়। 

    দার্জিলিং জেলার কার্শিয়াং পাহাড়ও ধসে বিপর্যস্ত। এদিন সকালে জিটিএ’র চিফ এগজিকিউটিভ অনীত থাপার বাড়ির কাছে নয়াবাজারে পাহাড় থেকে নেমে আসে বোল্ডার, নুরি ও মাটি। ক্ষতিগ্রস্ত হয় তিনটি বাড়ি। শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বাড়ির গার্ডওয়াল ধসে গিয়েছে। গাছ পড়ে অবরুদ্ধ হয়ে যায় রোহিণী রোড। 

    কার্শিয়াং পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য সুভাষ প্রধান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ও বাড়ির তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তা প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হবে। পাগলাঝোরায় ১১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ বসে গিয়েছে বলে খবর মিলেছে। প্রশাসন জানিয়েছে, দুপুরের আগেই গাছ কেটে রোহিণী রোডে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। 

    অন্যদিকে, পাহাড় ও সমতলে বৃষ্টি হওয়ায় ফুঁসছে তিস্তা, মহানন্দা, তোর্সা সহ একাধিক নদী। সেচদপ্তর সূত্রের খবর, মেখলিগঞ্জে তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় জারি করা হয়েছে হলুদ সঙ্কেত। মাথাভাঙায় মানসাই, কোচবিহারে তোর্সা, নাগরাকাটায় জলঢাকা, আলিপুরদুয়ারে কালজানি নদীর জলস্তর বেড়েছে। শিলিগুড়ি শহরের সফদর হাসমি চকে গাছ পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি মন্দির। খড়িবাড়ির বুড়াগঞ্জে গাছ পড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। 
  • Link to this news (বর্তমান)