নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: বহু পুরনো মেশিন। দীর্ঘদিন ধরে জোড়াতাপ্পি দিয়ে চালানো হচ্ছে বলে মাঝেমধ্যেই বিগড়ে যাচ্ছে সেগুলি। যে কারণে বন্ধ হয়ে পড়ছে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের অধীন সদর হাসপাতালের ডায়ালিসিস পরিষেবা। একবার মেশিন খারাপ হলে কলকাতা থেকে টেকনিশিয়ান না আসা পর্যন্ত তা আর সচল হচ্ছে না। কখনও আবার টেকনিশিয়ান এসে পৌঁছলেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাবে মেরামত করা যাচ্ছে না লজঝড়ে ডায়ালিসিস মেশিনগুলি। স্বাভাবিকভাবে কোনও মেশিন এক সপ্তাহ, কোনওটি ১৫ দিন পর্যন্ত অকেজো হয়ে পড়ে থাকছে। সবটাই জানে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। পুরনো মেশিন দিয়ে কাজ চালাতে গিয়ে ডায়ালিসিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবায় যে খামতি থেকে যাচ্ছে, একবাক্যে তা স্বীকারও করে নিচ্ছে তারা।
এদিকে, দিনের পর দিন এমনটা চললেও পুরনো মেশিন বদলে নতুন ডায়ালিসিস মেশিন না বসানোয় ক্ষোভ বাড়ছে রোগী ও তাঁদের পরিজনদের মধ্যে। একইভাবে এখনও পর্যন্ত জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে পরিষেবা না থাকায় বাইরে থেকে মোটা টাকা দিয়ে রোগীদের এমআরআই করাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবারের লোকজনের। তিন বছরেও মেডিক্যালে কেন এমআরআই পরিষেবা চালু হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। সুপার কল্যাণ খাঁ বলেন, পিপিপি মডেলে ডায়ালিসিস পরিষেবা দেওয়া হয়। চুক্তিবদ্ধ সংস্থাকে নতুন মেশিন বসাতে বলা হয়েছে। এমআরআইয়ের বিষয়টিও স্বাস্থ্যভবনে জানিয়েছি।
জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ডায়ালিসিসের পাঁচটি মেশিন। গত এক বছরের বেশি সময় কখনই সবক’টি মেশিন একসঙ্গে চালু হয়নি। কখনও একটি, দু’টি কিংবা সাকুল্যে তিনটি মেশিন দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। কিডনির অসুখে ভোগা রোগীদের অভিযোগ, জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের অধীন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ডায়ালিসিস ইউনিটে পাঁচটি মেশিন থাকলেও স্লট পাওয়া যায় না। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের ওই ইউনিটে ডায়ালিসিসের জন্য প্রাধান্য দেওয়া হয়। ফলে বাইরের রোগীদের ভরসা সদর হাসপাতাল। কিন্তু মেশিন খারাপ থাকায় প্রায় সেখানে পরিষেবা না পেয়ে ফিরে আসতে হয়।
জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের সুপার বলেন, সদর হাসপাতালে যে ডায়ালিসিস মেশিনগুলি রয়েছে, সেগুলি বহুদিনের। ফলে মাঝেমধ্যে খারাপ হচ্ছে। রোগীর চাপ সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তবে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ডায়ালিসিসের আরও একটি ইউনিট রয়েছে। নতুন ডায়ালিসিস মেশিনের জন্য চুক্তিবদ্ধ সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে।
কিন্তু সদর হাসপাতালে কবে বসবে নতুন মেশিন, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি সুপার। তাঁর কথায়, পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। আমাদের টার্গেট ছিল, পয়লা জুলাই চিকিৎসক দিবসে নতুন ডায়ালিসিস ইউনিট চালু করা। মনে হচ্ছে সেটা সম্ভব হবে না। দেখা যাক, স্বাধীনতা দিবসের আগে ওই ইউনিট চালু করা যায় কি না।