• হাতে স্যালাইনের চ্যানেল, তা নিয়েই দুষ্কৃতী ধরতে ছুটলেন পুলিস অফিসার
    বর্তমান | ২০ জুন ২০২৫
  • তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: ১০০ নম্বরে ডায়াল করেও কোনও লাভ হয়নি। দুষ্কৃতীরা চোখের সামনে দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। টহলদারি পুলিস ভ্যান সাড়া দিলে হয়তো দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করা যেত। কিন্তু না, কেউই সাড়া দিল না। অবশেষে মোবাইলে সেভ থাকা এক পুলিস অফিসারকে মধ্যরাতেই ফোন করেন এটিএম লুট হতে দেখা প্রত্যক্ষদর্শী নিমাই শীল। যদিও গৌতম মল্লিক নামে ওই পুলিস অফিসার জ্বর ও রক্তে সংক্রমণ নিয়ে রাতে ভর্তি ছিলেন মাটিগাড়া ব্লক হাসপাতালে। ফোন পেয়ে নিজেই প্রধাননগর থানাকে জানান। কর্তব্যরত চিকিৎসককে অনুরোধ জানিয়ে হাতের স্যালাইন খোলানোর ব্যবস্থা করেন। এরপর সোজা রওনা হন চম্পাসারির সেই এটিএম কাউন্টারে, যেখানে দুষ্কৃতীরা অপারেশন চালিয়েছে। শুধু গৌতমবাবু নন, প্রধাননগর থানার আইসি বাসুদেব সরকার সহ অফিসাররা তড়িঘড়ি টিম তৈরি করে অপরাধীদের ধরতে এবং টাকা উদ্ধারের চেষ্টায় অভিযানে নামেন।

    বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বিভিন্ন নাকা পয়েন্টে তল্লাশি চললেও অপরাধীদের  নাগাল পায়নি পুলিস। তদন্তকারী অফিসারদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি সংলগ্ন বিহার সীমান্তের দিকে সাদা রঙের ছোট গাড়ি ছুটিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। তাই ওই রুটে যাওয়া গাড়িগুলি ট্র্যাক করা হচ্ছে। বিহার সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্যে যেসব কুখ্যাত অপরাধী দল রয়েছে, তাদের হদিশ পেতেও মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। 

    শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, আমরা যেকোনও উপায়ে ওই দুষ্কৃতীদের নাগাল পেতে ঘটনার পর থেকেই তল্লাশি চালাচ্ছি। রাজ্যে এবং রাজ্যের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় টিম গিয়েছে। আশা করছি, অপরাধীদের শীঘ্রই ধরতে পারব। গৌতম মল্লিক বলেন, আমি অসুস্থ ঠিকই, তবে দায়িত্ব পালন করতেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ময়দানে নেমেছি। 

    প্রাথমিকভাবে পুলিসের ধারণা, বিহারের কিষানগঞ্জ, ঠাকুরগঞ্জ, মতিহারি এসব এলাকায় দুষ্কৃতী দলটি লুকিয়ে থাকতে পারে। ঘটনার সময়ে প্রত্যক্ষদর্শী তরুণী সুস্মিতা শীল একটি ভিডিও মোবাইলে তুলেছিলেন। ওই ভিডিওতে গাড়ির ছবি দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন রাস্তার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে সেই গাড়ি ট্র্যাক করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস। যদিও পুলিসের দাবি, এসব ক্ষেত্রে অপরাধীরা গাড়িতে ভুয়ো নম্বর প্লেট ব্যবহার করে। অপারেশন চালানোর পর ওই নম্বর প্লেট পরিবর্তন করে নেয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজগুলি সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে পুলিস। ঘটনার পর থেকেই কন্ট্রোল রুমে সিসি ক্যামেরার যেসব ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে, তা অনুসরণ করতে করতে বিহারের একেবারে প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল পুলিসের একটি টিম। যদিও তাদের খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ক্যামেরা ছাড়াও দার্জিলিং জেলা পুলিস সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্যের পুলিসের ক্যামেরার কন্ট্রোল রুমের ফুটেজও সংগ্রহ 

    করা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)