সংবাদদাতা, বালুরঘাট: নিত্য নতুন কৌশলে চলছে বালিচুরি! বাঁধ কেটে নদীতে ট্রাক্টর যাওয়ার রাস্তা তৈরি করে ফেলছে বালি মাফিয়ারা। বালুরঘাট ব্লকের বোল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিহরপুরে একেবারে আত্রেয়ী নদীতে সিমেন্টের রিং বসিয়ে চরে যাওয়ার রাস্তা তৈরি করছিল মাফিয়ারা। আর্থমুভার এনে সেই রিংগুলি সারিবদ্ধভাবে নদীবক্ষে বসানো হচ্ছিল। যাতে ছোট ওই সেতুর উপর দিয়ে সহজেই নদীতে ট্রাক্টর নামানো যায়। ওই কাজের জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল বহু কর্মী। এমন খবর পেতেই অভিযানে নামলেন বালুরঘাটের বিএলআরও রণেন্দ্রনাথ মণ্ডল। বৃহস্পতিবার পুলিস ও ভূমিদপ্তরের অভিযান টের পেয়ে বালি মাফিয়ারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। তবে, সিমেন্টের রিংগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে রাস্তাও। নদীবক্ষে এভাবে সিমেন্টের রিং বসিয়ে সেতু তৈরি দেখে হতবাক ভূমি সংস্কার দপ্তর এবং পুলিস। এনিয়ে ভূমি দপ্তর পতিরাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
বালুরঘাটের আত্রেয়ী নদী থেকে বালি চুরির প্রবণতা বেড়েছে। একাজ করে মাফিয়ারা লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছে। তারা কখনও বাঁধ কেটে রাস্তা তৈরি করছে, আবার কখনও নদীবক্ষে নতুন রাস্তা তৈরি করে চলছে দেদার কারবার।
বিএলআরও বলেন, নদীর ধারে সিমেন্টের রিং এনে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছিল। অভিযান চালালেও কাউকে সেখান থেকে ধরা যায়নি। কে বা কারা কাজটি করছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা ওই রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি।
ডিএসপি (সদর) বিক্রম প্রসাদ বলেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কৃষকদের অভিযোগ, মাস তিনেক আগে হরিহরপুরে একটি জায়গায় বাঁধ দিয়ে নদীর গতি আটকে দেওয়া হয়েছিল। ফলে চাষিরা সেচের জল পাচ্ছিলেন না। এনিয়ে তাঁরা জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরবর্তীতে ওই বাঁধ ভেঙে দিয়েছিল প্রশাসন। জানা গিয়েছে, এখন জল বেড়ে যাওয়ায় নদীতে ট্রাক্টর নামাতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে হরিহরপুরে বাঁধ কেটে নদীবক্ষে সিমেন্টের বড় বড় রিং এনে বসানো হচ্ছিল। বুধবার থেকে এই কাজ শুরু করে বালি মাফিয়ারা। ৫০ জন কর্মী লাগিয়ে কাজ চলছিল। সেই খবর পেয়েই অভিযান চালায় ভূমি দপ্তর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, আগেও আমাদের সেচের জল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এবার বড় বড় সিমেন্টের রিং এনে রাস্তা ও সেতু তৈরি করছিল। আমরা প্রতিবাদ করলে হুমকি ও ভয় দেখায়। সেই কারণে কেউ আর প্রতিবাদ করে না। - নিজস্ব চিত্র।