• লক্ষ্যভেদে যত নিপুণ, সেই বন্দুকের দামও তত, টুকরো করে এনে অ্যাসেম্বল করে মুঙ্গেরের কারিগররা
    বর্তমান | ২০ জুন ২০২৫
  • নির্মাল্য সেনগুপ্ত, রায়গঞ্জ: লক্ষ্যভেদে যত বেশি ক্ষমতা, সেই আগ্নেয়াস্ত্র বা মেশিনের দাম তত বেশি। সমাজ বিরোধীদের কাছে বিহারের একনলা ওয়ান শটার থেকে সেভেন পয়েন্ট সিক্স এমএম ইম্প্রোভাইজ, নাইন এমএম সবেরই চাহিদা রয়েছে। একনলা ওয়ান শটারের দাম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা, সেভেন পয়েন্ট সিক্স এমএম ইম্প্রোভাইজ আগ্নেয়াস্ত্রের দাম ২০ হাজার, নাইন এমএম বিকোচ্ছে ৩৫ হাজার টাকায়। গত কয়েক সপ্তাহে বিভিন্ন সময় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিসের হাতে। 

    পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক সপ্তাহে রায়গঞ্জ থানার তৎপরতায় পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র রাখার দায়ে পুলিস পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সেই ঘটনাগুলির তদন্ত চালিয়ে পুলিসের অনুমান, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাপথে বিহারের মুঙ্গের থেকে ঢোকে রায়গঞ্জে। পৌঁছে যায় আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রয়কারী ও দুষ্কৃতীদের হাতে। 

    তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহার থেকে পাচার হওয়ার সময় অনেকগুলি টুকরোয় ভাগ করে আগ্নেয়াস্ত্র আনা হয়। পরে মুঙ্গেরের কারিগররাই সেই অস্ত্র অ্যাসেম্বল করে দেয়। এক্ষেত্রে আগ্নেয়াস্ত্র কথাটি উচ্চারণও করে না দুষ্কৃতীরা কোড নাম ব্যবহার করে। রায়গঞ্জে ।আগ্নেয়াস্ত্রের কোড নাম মেশিন।

    এব্যাপারে রায়গঞ্জ থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, দফায় দফায় অভিযান চলছে। নজরদারি রাখা হচ্ছে বলে অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে। তবে সেগুলি কোন পথে রায়গঞ্জে আসছে, দাম কত, সেসব তদন্ত সাপেক্ষ। 

    পুলিস সূত্র অনুযায়ী, গত কয়েক সপ্তাহে যে ক’জন আগ্নেয়াস্ত্র সহ পাকড়াও হয়েছে, তাদের কেউ কেউ আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির চেষ্টায় ছিল। কয়েকজন অপরাধমূলক কাজ করার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করে রেখেছিল। কেউ আবার পরিচিত কারও কথায় আগ্নেয়াস্ত্র বাইকের সিটের তলায় লুকিয়ে রাখে। সবক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। এরমধ্যে ওয়ান শটার যেমন রয়েছে, সেভেন পয়েন্ট সিক্স এমএম ইম্প্রোভাইজ আগ্নেয়াস্ত্রও মিলেছে। যেগুলি মুঙ্গেরের কারিগর ছাড়া তৈরি সম্ভব নয়।

    তদন্তে পুলিসের আরও অনুমান, সাধারণত ছোটখাট ডাকাতি, চুরির ঘটনায় ওয়ান শটার ব্যবহার করে দুষ্কৃতীরা। যা শুধুমাত্র ভয় দেখানোর জন্যই বেশি ব্যবহার হয়। কিন্তু সেভেন পয়েন্ট সিক্স এমএম ও নাইন এমএম আগ্নেয়াস্ত্র পেশাদার দুষ্কৃতীরাই ব্যবহার করে। যারা শুধু ভয় দেখানোর জন্যই মেশিন ব্যবহার করে না। প্রয়োজনে সেই মেশিন থেকে গুলি ছুড়তেও পিছপা হয় না।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)