• আরামবাগের প্রাক্তন সাংসদকে জাত তুলে ‘অকথ্য’ ভাষায় অপমান করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত শিক্ষক দম্পতি!
    আনন্দবাজার | ১৯ জুন ২০২৫
  • প্রায় চার বছর আগে আরামবাগের প্রাক্তন সাংসদ অপরূপা পোদ্দারকে ‘অকথ্য’ ভাষায় অপমান করা হয়। এমনকি, তাঁর শ্লীলতাহানিও করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। সেই মর্মে পুলিশের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রাক্তন সাংসদ। চুঁচুড়া আদালতে চলছিল সেই মামলা। সেই মামলায় বুধবার রিষড়ার বাসিন্দা এক শিক্ষক দম্পতিকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা হবে।

    ২০২১ সালে ৬ সেপ্টেম্বর আরামবাগের প্রাক্তন সাংসদ অপরূপা শ্রীরামপুর থানায় রিষড়ার বাসিন্দা নাসিম আখতার ও তাঁর স্ত্রী আনসারি খাতুনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধানশিক্ষক নাসিম ও তাঁর স্ত্রী আনসারি একটি বেসরকারি উর্দু স্কুলে পড়ান। তাঁদের বাড়িতে ‘মধুচক্র’ চালানোর অভিযোগ পেয়ে সাংসদ ও তাঁর স্বামী সাকির আলি সেখানে যান। সেই সময় সাংসদকে জাত তুলে অকথ্য ভাষা ব্যবহার এবং তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। সেই মামলার বিচার পর্ব চলে চুঁচুড়া আদালতের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট এবং সেশন জাজ স্পেশাল কোর্টে। বুধবার রিষড়ার বাসিন্দা ও শিক্ষক দম্পতিকে দোষী সাব্যস্ত করল চুঁচুড়া আদালত।

    বিচারক সঞ্জয়কুমার শর্মা জানান, অভিযুক্ত দম্পতির বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ দায়ের করা হয়ছিল তার মধ্যে দু’টি ধারা (৩৫৪ ও ৫০৬) থেকে মুক্তি পেয়েছেন তাঁরা। তবে, এক্রোসিটি এসসি ও এসটি আইনে তাঁদেরকে দোষী সাব্যস্ত করেছে কোর্ট। সেই ধারায় সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা হতে পারে।

    আদালত থেকে বেরিয়ে ওই দম্পতি জানান, তাঁদেরকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। সাংসদের স্বামী, কাউন্সিলর সাকির আলি তাঁদের থেকে টাকা নিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই অভিযোগ যাওয়ায় টাকা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন সাকির। তার প্রতিশোধ নিতে ওই দম্পতির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়। এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানান ওই দম্পতি।

    অভিযুক্তদের আইনজীবী মৃন্ময় মজুমদার বলেন, “যে দিনের ঘটনার অভিযোগ, সে দিন ওই সময় দুই অভিযুক্ত শ্রীরামপুর হাসপাতালে ছিলেন। ‘মধুচক্র’ চালানোর অভিযোগ আদালত খারিজ করে দেয়। আদালতের রায়ে প্রচণ্ড হতাশ হয়েছি। এই রায় অপ্রত্যাশিত। তবু আদালত বিচার ব্যবস্থার উপর আমাদের আস্থা আছে।”

    সরকারি আইনজীবী শংকর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “প্রাক্তন সাংসদ এক জন তপশিলি জাতির মহিলা। অভিযুক্তদের বাড়িতে ‘মধুচক্র’ চালানো হচ্ছে সেই খবর পেয়ে যখন তিনি সেখানে গিয়েছিলেন তখন প্রাক্তন সাংসদকে জাতপাত তুলে গালিগালাজ করা হয়। মোট ন’জনকে সাক্ষী করা হয়। মামলায় আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি যে জাত তুলে গালিগালাজ করা হয়েছে। সেই মামলায় আজ আদালতের বিচারক দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। আগামী কাল হবে সাজা ঘোষণা।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)