• তীর্থে গিয়ে ‘যুদ্ধবিধস্ত’ ইরানে আটকে দেগঙ্গার শিশু-সহ ৯, নিরাপদে ফিরিয়ে আনার আবেদন পরিবারের
    প্রতিদিন | ২০ জুন ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাসত: বিশ্ব দেখছে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ভয়াবহতা! ‘যুদ্ধবিধস্ত’ ইরানে তীর্থে (জিয়ারাত) গিয়ে আটকে পড়েছেন দেগঙ্গার চৌরাশি গ্রামের ঢালিপাড়ার তিনটি পরিবারের মোট ৯ জন। তাদের মধ্যে ২ জন শিশুও রয়েছে। বিগত দু’দিন ধরে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ পরিবারের। পাশাপাশি পড়াশোনার জন্য চৌরাশি গ্রামেরই কয়েকজন ইরানে রয়েছেন বলেও সূত্রের খবর। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ১১-১২ জনের বেশি। স্বাভাবিকভাবেই একই গ্রামের এতজন ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত’ দেশে আটকে পড়ায় দুশ্চিন্তায় সকলে। সুস্থভাবে সকলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছে পরিবার।

    জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইরানে আটকে পড়া দেগঙ্গাবাসীদের নাম সেলিম আলি মণ্ডল (৪৫), তার স্ত্রী সেহুলি বিবি (৪০), তাদের দুই সন্তান, গফুর মণ্ডল (৬০), তাঁর স্ত্রী সুকরান বিবি (৫০), আক্রম মণ্ডল (৩৮) এবং সাহিদ আলি গাইন (৪৫) ও তাঁর স্ত্রী মোসলেমা বিবি (৪০)। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মে মাসের ৩০ তারিখ তাঁরা ইরানের রাজধানী তেহরান শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন।

    এরই মধ্যে ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতি শুরু হওয়ায় সকলে কুম শহরে আশ্রয়ে এসেছেন বলে জানতে পেরেছেন তাঁরা। তবে মঙ্গলবারের পর থেকে তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি। ফলে দুশ্চিন্তায় সকলে। সাহিদ আলির ছেলে হোসেন মেহেদি বলেন, “বাবা, মা, কাকু, কাকিমা-সহ প্রতিবেশীরা মিলে ইরানে জিয়ারাতে উদ্দেশ্যে গিয়েছিল। গত বুধবার তাদের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু মঙ্গলবারের পর আর কোনও কথা হচ্ছে না। সকলকে সুস্থভাবে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।” গ্রামবাসী মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, “১১-১২জন মত ইরানে আটকের আছে। তীর্থ বাদে বাকিরা পড়াশোনার জন্য গিয়েছে। ওঁরা স্থায়ী ভিসায় ইরানে থেকে পড়াশোনা করত। তাদের নিয়েও সকলে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।” পরিবারকে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, “আমরা পরিবারগুলির পাশে আছি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছি। আমাদের তরফেও কিছু করার থাকলে তা চেষ্টা করা হবে।”

    উল্লেখ্য, গত শুক্রবার থেকে ইরানের রাজধানী তেহরান-সহ একাধিক স্থানে নজিরবিহীন হামলা চালানো শুরু করেছে ইজরায়েল। লাগাতার হামলার জেরে এখনও পর্যন্ত ইরানে মৃত্যু হয়েছে পাঁচশোর বেশি মানুষের। বৃহস্পতিবার সকালেও দুই দেশ একে অপরকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। বারাসতের মহকুমা শাসক সোমা দাস জানিয়েছেন, “প্রশাসনিক স্তরে আমাদের কাছে খবর রয়েছে তিনজন মহিলা, দু’জন শিশু-সহ মোট ন’জন ইরানের আটকে রয়েছে। শুক্রবার এনিয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে নবান্নের হোম অ্যান্ড হিল অ্যাফেয়ার্স দপ্তরের জানানো হয়েছে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)