নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জলমগ্ন ঝাড়গ্রাম। ভারী বৃষ্টিতে সুবর্ণরেখা, কংসাবতী, ডুলুং ও তারাফেনী নদীতে জলস্তর বাড়ছে। আর তার জেরে ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়ার মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তারাফেনী নদীর উপর বেলপাহাড়ি ব্লকের এঁটালায় ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের কালভার্ট জলের তলায় চলে গিয়েছে। অন্য দিকে, গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকে ডুলুং নদীর উপরে থাকা বাঘেশ্বর ও বড়ামারার কজওয়েও জলের তলায় চলে গিয়েছে। সব মিলিয়ে বেশ সমস্যায় পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
বর্ষার সময়ে প্রতিবারই গিধনি, চিঁচিড়া, চিল্কিগড়ের বাসিন্দাদের সমস্যায় পড়তে হয়। এ বারেও চিল্কিগড়ের কজওয়ে ডুবে যাওয়ায় সেখানকার বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েছেন। চিল্কিগড়ের কজওয়েটি ডুলুং নদীর জলের তলায় চলে গিয়েছে। তার ফলে ঝাড়গ্রাম জেলা সদর থেকে জামবনি ব্লক সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, ব্রিজ তৈরির জন্য মাটি পরীক্ষার পাশাপাশি নকশা তৈরি হয়ে গিয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলেই ব্রিজের কাজ শুরু হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা শক্তিপদ রানা বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষার সময়ে চিল্কিগড়ের কজওয়ে জলের তলায় চলে যায়। রাস্তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের। এখানে ব্রিজ তৈরি করার দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো হচ্ছে। শুনেছি ব্রিজ তৈরির জন্য অনেকবার মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ব্রিজ তৈরি হয়নি।’ এ দিকে, ডুলুং নদীর উপর থাকা বড়ামারার কজওয়েটি জলের তলায় চলে যাওয়ায় লোধাশুলির সঙ্গে গোয়ালমারা, মহাপাল, রগড়া-সহ একাধিক এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। লালগড় ব্লকের রামগড়ে মুরার খালের জল বেড়ে যাওয়ায় লালগড় ও রামগড়ের মধ্যেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঝাড়খন্ডের গালুডি জলধার থেকেও দুই দফায় সুবর্ণরেখা নদীতে জল ছাড়া হয়েছে। সকালে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৫০০ কিউসেক এবং দুপুরে ২ লক্ষ ৪৩ হাজার ৬৫০ কিউসেক জল ছাড়া হয়। গালুডি জলাধার থেকে এত পরিমাণে জল ছাড়ায় সুবর্ণরেখা নদীর তীরবর্তী গোপীবল্লভপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লক এবং সাঁকরাইল ও নয়াগ্রাম ব্লকের উপর বিশেষ নজর রয়েছে জেলা প্রশাসনের। ঝাড়গ্রামের আটটি ব্লকে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রয়োজনীয় জিনিস মজুত রাখা হয়েছে। ব্লকগুলির পাশাপাশি জেলাতে ২৪ ঘন্টা কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।
জেলার বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ গায়েন বলেন, ‘প্রতিটি ব্লকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণের জিনিস মজুত রাখা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এ ছাড়াও জেলায় কুইক রেসপন্স টিম প্রস্তুত রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত জেলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’