কিরণ মান্না: পটাশপুরে ১৪ বছরের কিশোরী যৌন নির্যাতনের অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতীর অভিযোগে উত্তেজনা এলাকায়। গ্রেফতার দুই আত্মীয় কিশোর। অত্যাচারের ভিডিয়ো করে ভাইরালের ভয় দেখিয়ে বারে বারে নির্যাতনের প্রয়াস। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরেই আত্মঘাতী নাবালিকা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ১ নম্বর ব্লকের নৈপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মির্জাপুর গ্রামে আত্মঘাতী এক ১৪ বছরের নাবালিকা।
প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার কারণ স্পষ্ট না হলেও, সম্প্রতি পুলিসের তদন্তে উঠে এসেছে অত্যন্ত মারাত্মক অভিযোগ। বাড়িতে পরিবারের লোকজন না থাকার সুযোগ নিয়ে একা কিশোরীকে পেয়ে যৌন নির্যাতন চালায় আর সেই ভিডিও রেকর্ডিং করে অভিযুক্তরা। ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার যৌন নির্যাতনের চেষ্টা চালিয়েছিল অভিযুক্তরা। অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয় কিশোরী।
অভিযুক্ত দু’জনই তার আত্মীয়-- একজন কাকাতো ভাই, অপরজন জ্যাঠাতুতো ভাই। পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্তরা গোপনে ওই নির্যাতনের ভিডিয়ো রেকর্ড করে। আত্মঘাতীর পর কারণ বুঝতে ধন্দ্বে ছিল পরিবার। এই মানসিক চাপ ও অপমান সহ্য করতে না পেরে প্রায় দেড় মাস আগে আত্মহত্যা করে ওই কিশোরী। বুধবার তার হিন্দু ধর্ম মতে ক্রিয়াকর্ম সম্পন্ন করা হয়।
পুলিস সূত্রে খবর, মৃত্যুর পর প্রথমে একটি ইউডি কেস রুজু করা হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তদন্তে পুলিস ওই ভিডিয়ো ক্লিপ হাতে পায়। সেই সূত্র ধরেই উঠে আসে যৌন নির্যাতনের চিত্র। এরপরই তৎপর হয় পটাশপুর থানার পুলিস। দীর্ঘ অনুসন্ধান চালিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয় দুই অভিযুক্ত কিশোরকে, যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে।
বুধবার তমলুকের জুভেনাইল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের হোম হেফাজতের নির্দেশ দেন। আপাতত অভিযুক্ত দু’জন সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রতিবেশীদের অনেকেই এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন। অপরদিকে, ঘটনার রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে শুরু করেছে এলাকায়।
অপরদিকে পটাশপুরের আত্মঘাতী কিশোরীর বাড়িতে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান এলাকার সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী। এলাকার একজন সাংসদ হিসেবে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। এছাড়াও সামাজিক এইভাবে অবক্ষয় নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।