২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটাই শেষ উপনির্বাচন পশ্চিমবঙ্গে। একদিকে যেমন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ঝালিয়ে নেওয়ার শেষ জায়গা, অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের কাছেও কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচন ছিল এক অ্যাসিড টেস্ট।
নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবারের এই উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমন কিছু পদক্ষেপ করেছে, যা রাজ্যের নির্বাচনের ইতিহাসে একেবারেই প্রথমবার। এতদিন পর্যন্ত প্রত্যেক বুথের ভিতর ওয়েব কাস্টিং করা হত, এবার বুথের বাইরেও লাইভ স্ট্রিমিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্যুইক রেসপন্স টিমের প্রতিটি গাড়ির মাথায় লাগানো ছিল ক্যামেরা, সেখান থেকেও লাইভ স্ট্রিমিং। র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স-এর যে গাড়িগুলি ছিল, তার মাথাতেও লাগানো ছিল ক্যামেরা। সেখান থেকেও লাইভ স্ট্রিমিং চলেছে দিনভর।
অর্থাৎ, ভোটের দিন বিভিন্ন হিংসাকে কেন্দ্র করে শাসক বিরোধী দুই তরফেই বারবার অভিযোগ ওঠে, তার মোকাবিলা করতেই নির্বাচন কমিশন এই ধরনের পদক্ষেপ করেছে রাজ্যে প্রথমবার। কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের জন্য ১৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল, সঙ্গে ছিল ২ হাজার রাজ্য পুলিশ। ক্যুইক রেসপন্স টিম ছিল ২০টি। র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স ছিল ৮টি। ক্যুইক রেসপন্স টিমে ৮ জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ও একজন এএসআই পদমর্যাদার অফিসার ছিলেন।
বলাই যায়, নদিয়া জেলার কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনকে সম্পূর্ণ লাইভ স্ট্রিমিং-এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন মুড়ে ফেলেছিল। উপনির্বাচন ঘিরে কালীগঞ্জে ছিল কড়া নিরাপত্তা। ১৬২টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে ছিল ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়। ১৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছিল পুলিশ।
কমিশন সূত্রে খবর, এবার ১০০ শতাংশ বুথেই ছিল ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যবস্থা। নজরদারির জন্য রাজ্য, জেলা এবং বিধানসভা ভিত্তিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছিল। প্রতিটি স্তরে নজরদারিতে ছিলেন একজন নোডাল অফিসার। নদিয়ার কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে তৃণমূল, বিজেপি ও বাম-কংগ্রেস জোটের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই। ২০১১ ও ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে কালীগঞ্জ দখল করেছিল তৃণমূল। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখেও এই কেন্দ্রে এগিয়ে শাসক দল। এবার কী হবে? উত্তর মিলবে ২৩ জুন।