‘জ়িরো’ এফআইআরের আদর্শ কার্যবিধি, নির্দেশিকা পুলিশের
আনন্দবাজার | ১৯ জুন ২০২৫
এত দিন ঘটনাস্থল এলাকার বাইরে হলে কোনও ভাবে ‘জ়িরো’ এফআইআর দায়ের করেই কার্যত দায় ঝেড়ে ফেলত রাজ্যের বহু থানা। সেই মনোভাব বদলাতে এ বার নির্দেশিকা জারি করতে হয়েছে রাজ্য পুলিশকে। প্রশাসনের খবর, এ ব্যাপারে আদর্শ কার্যবিধি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর বা এসওপি) তৈরি করে বলা হয়েছে যে ‘জ়িরো’ এফআইআর দায়ের করে তা অন্য থানায় (যার এলাকায় ঘটনা হয়েছে) পাঠিয়ে দিলে হবে না। ‘জ়িরো’ এফআইআর দায়ের করা থানাকে অভিযোগ জানার পরে প্রয়োজনে প্রাথমিক তদন্ত করতে হবে। যৌন নির্যাতনের অভিযোগ থাকলে অভিযোগকারীর মেডিক্যাল পরীক্ষাও করতে হবে। ইতিমধ্যেই এই কার্যবিধি জেলা পুলিশ এবং কমিশনারেটগুলিকে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, এই নির্দেশ যাতে পালন হয় তা নিশ্চিত করতে ‘অবাধ্য’ অফিসারদের শাস্তির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এফআইআর দায়ের করা থানা তদন্তভার অন্য থানাকে দিয়ে দেয় বলে এই এফআইআরকে পুলিশি পরিভাষায় ‘জ়িরো’ এফআইআর বলা হয়। পুলিশকর্তাদের মতে, সম্প্রতি ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতায় (বিএনএসএস) এই ‘জ়িরো’ এফআইআর নিয়ম করা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বহু থানা নিয়মরক্ষায় এফআইআর রুজু করে অন্য থানায় পাঠিয়ে দিচ্ছে। সক্রিয় হয়ে প্রাথমিক তদন্ত না করায় বহু ক্ষেত্রে প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণও নষ্ট হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এসওপি-তে বলা হয়েছে যে ‘জ়িরো’ এফআইআর দায়ের করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা ইমেলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠাতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে তা সিসিটিএনএস পোর্টালেও আপলোড করতে হবে। প্রথম ২৪ ঘণ্টায় তদন্তের ভার থাকবে এফআইআর দায়ের করা থানার কাঁধেই। প্রাথমিক তদন্তের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগপত্র, প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট ও বাজেয়াপ্ত হওয়া তথ্যপ্রমাণ পাঠাতে হবে ঘটনাস্থল যে থানার এক্তিয়ারভুক্ত, তাদের কাছে।
পুলিশের খবর, ‘জ়িরো’ এফআইআর নিয়ে থানাগুলিকে রেজিস্টার তৈরি করতে বলা হয়েছে। তাতে থাকবে দায়ের হওয়া সব ‘জ়িরো’ এফআইআরের বিস্তারিত তথ্য। কোন থানাকে তা পাঠানো হয়েছে, সেখানে কী ব্যবস্থা গ্রহণ হয়েছে, তা উল্লেখ করতে হবে। পুলিশ জানিয়েছে, কার্যবিধি অনুযায়ী জেলা পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনারদের ‘জ়িরো’ এফআইআরের প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধানের জন্য এক জন করে নোডাল অফিসার নিয়োগও করতে হবে।