রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনে নির্বাচন চানশুভেন্দু, মমতার তুলসী-খোঁচা
আনন্দবাজার | ১৯ জুন ২০২৫
শর্তসাপেক্ষে হাইকোর্ট থেকে অনুমতি পেয়ে মহেশতলায় ঘুরে গেলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সংঘর্ষের এলাকা দেখে বেরিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের ‘ব্যর্থতা’র অভিযোগ করে রাষ্ট্রপতি শাসনের আওতায় রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচন করার দাবিতে সরব হয়েছেন তিনি। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবারই শুভেন্দুর নাম না-করে বিজেপির ‘তুলসী গাছ রাজনীতি’ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন।
দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ এবং পুলিশকে আক্রমণের জেরে গত সপ্তাহে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রবীন্দ্রনগর থানা এলাকা। সেই ঘটনার পরেই রবীন্দ্রনগর এলাকায় আসবেন বলে শুভেন্দু হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আদালতের শর্তসাপেক্ষ অনুমতি পেয়েই এ দিন মহেশতলা আসেন তিনি। আসার পথে সন্তোষপুর রোডে বিরোধী দলনেতাকে দেখে 'চোর, চোর' বলে স্লোগান দেন কিছু তৃণমূল সমর্থক। যার জেরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর অনুগামীদের পাল্টা নিশানা করেছেন শুভেন্দু। প্রসঙ্গত, ওই এলাকা অভিষেকের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের মধ্যে পড়ে।
মহেশতলা পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রনগর থানা সংলগ্ন এলাকায় একটি দোকান তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বেধেছিল। তার জেরে সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা, আহত হন একাধিক পুলিশ-কর্মী। ঘটনাস্থলে এসে এ দিন স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন শুভেন্দু। আহতদের সঙ্গেও কথা বলেন। মন্দিরের ভিতরে বেশ কয়েক জন মহিলা তাঁকে দেখে বিক্ষোভ দেখান। শুভেন্দু বলেন, ‘‘নেচার পার্ক থেকে ভিডিয়োও করতে করতে এসেছি, হাইকোর্টে জমা দেব।’’ ওই এলাকায় প্রশাসনের ১৬৩ ধারা জারি করা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘‘১৬৩ ধারা কি বিজেপির জন্য না হিন্দুদের জন্য?’’
পরে মহেশতলায় কী ভাবে ‘হিন্দুরা আক্রান্ত’ হয়েছেন এবং তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপি তুলসী গাছ হাতে প্রতিবাদ করেছে, সে সব নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা। আর নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতার মন্তব্য, ‘‘আমার বাড়িতে ৪০টা তুলসী গাছ রয়েছে। তুলসীর মধ্যে লক্ষ্মী এবং নারায়ণ রয়েছে। কোথাও একটা তুলসী গাছ লাগিয়ে দিলেই হয় না, সব জায়গায় তুলসী গাছ হয় না। আপনারা তুলসী গাছকে অপমান করেছেন!’’
রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে বিধানসভা ভোটের যে দাবি বিরোধী দলনেতা তুলেছেন, তার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘এ সব করেও ২০২১ ও ২০২৪ সালের দু’টি নির্বাচনে শুভেন্দুর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। আরও এক বার হবে!’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘পরের বার হয়তো রাষ্ট্রসঙ্ঘে যাবেন!’’