ঘাটতি মেটাতে কুকুরদের প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করতে চলেছে রাজ্য পুলিশই
আনন্দবাজার | ১৯ জুন ২০২৫
প্রতিটি জেলা এবং পুলিশ জেলায় ডগ স্কোয়াড তৈরি করার লক্ষ্যে এ বার রাজ্য পুলিশই কুকুরের প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলতে চাইছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ব্যারাকপুরে স্বামী বিবেকানন্দ রাজ্য পুলিশ অ্যাকাডেমিতে ওই কেন্দ্র খোলা হবে। সেখানে প্রজননের পরে প্রশিক্ষণ দিয়ে বাহিনীর সারমেয় সদস্যদের পাঠানো হবে জেলায় জেলায় ডগ স্কোয়াডের ডিউটিতে। তবে, এই প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কবে চালু হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ব্যারাকপুরে ওই প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সঙ্গে কুকুরদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ব্যবস্থাও থাকছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষক ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা।
বর্তমানে রাজ্য পুলিশের হাতে ৭০টি কুকুর রয়েছে। তাদের মধ্যে ৩০টি থাকে ব্যারাকপুরে স্বামী বিবেকানন্দ ট্রেনিং সেন্টারে। অন্য কুকুরগুলি রয়েছে বিভিন্ন জেলা, পুলিশ কমিশনারেট এবং রেল পুলিশের হাতে। তাদের মধ্যে অনেকগুলি ল্যাব্রাডর ও জার্মান শেফার্ড প্রজাতির।তবে, কোনও জায়গাতেই পুলিশের হাতে দু’টি বা তিনটির বেশি কুকুর নেই। ব্যারাকপুরে কুকুরের প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি চালু হয়ে গেলে প্রতিটি ডগ স্কোয়াডে চার-পাঁচটি করে কুকুরদেওয়া হবে। এতে অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে কিংবা মাদক ও বিস্ফোরক শনাক্ত করতে সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, ঝাড়গ্রাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন জেলায় এখনও ডগ স্কোয়াড তৈরি হয়নি। প্রয়োজনে সেখানে অন্য জেলা থেকে কুকুর নিয়ে আসতে হয়। এ ছাড়া, রাজ্যেরবাইরে বেঙ্গালুরু কিংবা চণ্ডীগড় থেকে কুকুর কেনা হয়। এর জন্য প্রতি বছর অর্থ ব্যয় হয়। শুধু তা-ই নয়, এই পুলিশ কুকুরদের প্রশিক্ষণও হয় রাজ্যের বাইরে। ওই পুলিশকর্তা জানান, ব্যারাকপুরেনতুন কেন্দ্রটি চালু হলে কুকুরদের প্রশিক্ষণের খরচ যেমন বাঁচবে, তেমনই এখান থেকেই বিভিন্ন জেলায় দরকার মতো কুকুর পাঠানো যাবে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত কুকুর ভিন্ রাজ্যে বিক্রিও করা যাবে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রস্তাবিত এই প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কুকুরদের অপরাধ দমন বা মাদক ও বিস্ফোরক শনাক্ত করার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি, পাহারাদারেরপ্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। আপাতত প্রজননের জন্য দু’টি ল্যাব্রাডরকে ব্যবহার করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। পরে বাকি প্রজাতির কুকুরদের প্রজননের কাজে লাগানো হবে। এর সঙ্গেই রাজ্যের বাইরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে চুক্তির ভিত্তিতে প্রশিক্ষক নেওয়া হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, এক থেকে দেড় মাস বয়সি সারমেয়দের ছ’মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ব্যারাকপুরের এই কেন্দ্রে। এর পরে তাদেরকাজের জন্য নির্দিষ্ট ইউনিট বা ডগ স্কোয়াডে পাঠানো হবে। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রশিক্ষণের সময় থেকেই সারমেয়দের বাহিনীতে নিয়ে নেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে তারা পুরোদস্তুর চাকরি পাবে। বেতন মিলবে নিয়মিত। সেই বেতন খরচ হবে সংশ্লিষ্ট কর্মীর পিছনে।