এই সময়, তমলুক: এক বছরে মধ্যে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ২৬৫কোটি টাকা খরচ করে ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে গোটা রাজ্যের মধ্যে প্রথম হলো পূর্ব মেদিনীপুর। বরাদ্দ হওয়া অর্থের ৯১শতাংশ টাকা খরচ হয়েছে জেলায়।
গতবছর লোকসভা ভোট চলাকালীন ওই প্রকল্পে ১৮তম স্থানে পৌঁছে গিয়েছিল এই জেলা। তারপরে জেলা প্রশাসনের একটানা নজরদারি এবং নানাবিধ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে অর্থ-বর্ষ শেষে রাজ্যের মধ্যে শীর্ষস্থানে পৌঁছে গেল এই জেলা।
এই মুহূর্তে গ্রামীণ উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল পঞ্চদশ অর্থ কমিশনে। গ্রামীণ উন্নয়নে জোর দেওয়ার ফলেই এই সাফল্য বলে জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের অফিসাররা।
রাজ্যের মধ্যে নন্দীগ্রাম-২পঞ্চায়েত সমিতি ওই প্রকল্পে শীর্ষে রয়েছে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, ‘পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের পারফরম্যান্সের নিরিখে রাজ্যের মধ্যে আমরা প্রথমে রয়েছি। এটা প্রশাসন এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সাফল্য। টিম ওয়ার্কের জন্যেই এই সাফল্য এসেছে।’
জানা গিয়েছে, ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে এই জেলা পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রথম কিস্তি বাবদ মোট ২৮৭ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা পেয়েছিল। তারমধ্যে ২২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত পেয়েছিল ১৮৪কোটি ৯৭লক্ষ টাকা।
২৫টি পঞ্চায়েত সমিতিকে দেওয়া হয়েছিল ৪০কোটি টাকা। জেলা পরিষদ পেয়েছিল ৬২কোটি ৫৫লক্ষ টাকা। গত বছর লোকসভা ভোট গিয়েছে। নির্বাচনের প্রাক-মুহূর্তে প্রশাসনের মাথায় রদবদল ঘটেছে। গ্রামীণ উন্নয়নেও তার প্রভাব পড়েছে।
যে কারণে এক সময়ে ওই প্রকল্পে ১৮তম স্থানে নেমে গিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে প্রশাসনে স্থিতাবস্থা ফিরতেই গ্রামীণ উন্নয়নে গতি আসে। অর্থ খরচে পিছিয়ে থাকা গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিকে বেছে নিয়ে স্পেশাল ড্রাইভের সাহায্যে উন্নয়নের কাজ শুরু হয়।
এ ভাবেই কাজ করে মার্চের শেষেই জেলা শীর্ষে চলে আসে।জেলার ২৫টি ব্লকে ২২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত। সব গ্রাম পঞ্চায়েত পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় গ্রামীণ উন্নয়নে এক বছরে মোট ১৭৪কোটি টাকা খরচ করেছে।
পঞ্চায়েতগুলি শতকরা ৯৪ভাগ টাকা খরচ করে ফেলেছে। ২৫টি পঞ্চায়েত সমিতি ৩৮কোটি ৮৮লক্ষ টাকা খরচ করেছে। শতকরা ৯৭ভাগ টাকা খরচ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রকল্পে।
নন্দীগ্রাম-২, তমলুক ও ময়না পঞ্চায়েত সমিতি ১০০শতাংশ অর্থ খরচ করেছে। জেলা পরিষদ ৪৭ কোটি ৯৫লক্ষ টাকা খরচ করেছে। জেলা পরিষদ শতকরা ৭৬.৬৬ ভাগ টাকা খরচ করেছে। জেলা পরিষদ তহবিলে আর ১৪কোটি ৬০লক্ষ টাকা রয়েছে। এ ভাবে ধাপে ধাপে কাজ করে পঞ্চায়েত গড়ে ৯১ভাগ টাকা খরচ করেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা টায়েড এবং আন টায়েড দু’ই খাতে খরচ করতে হয়। টায়েড খাতে মূলত পানীয় জল, নিকাশি এবং শৌচালয় তৈরি করা হয়।
আন টায়েড খাতে পাওয়া অর্থ যে কোনও স্কুলের রুম, আইসিডিএস সেন্টার, পঞ্চায়েত অফিস, রাস্তা তৈরি– সহ নানাভাবে খরচ করা যায়। নন্দীগ্রাম-২ব্লকের বিডিও সুপ্রতীম আচার্য বলেন, ‘আমাদের পঞ্চায়েত সমিতি ৪০লক্ষ ৭০হাজার ১০৫টাকা পেয়েছিল। এই মুহূর্তে সব টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। জেলা এবং রাজ্যের মধ্যে আমরা এই মুহূর্তে এক নম্বরে রয়েছি।’