• দুর্যোগের বার্তা পেয়ে ফিরল ট্রলার, ইলিশ মরশুমে ধাক্কা
    এই সময় | ১৯ জুন ২০২৫
  • এই সময়, কাকদ্বীপ: ইলিশের মরশুমের শুরুতেই ধাক্কা! নিম্নচাপের সতর্কবার্তা পাওয়ার পর মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বঙ্গোপসাগর থেকে সুন্দরবনের উপকূলের ঘাটগুলিতে ফিরে এসেছে মৎস্যজীবীদের সমস্ত ট্রলার।

    বুধবার জেলাজুড়ে কমলা সতর্কতা জারি ছিল। নিম্নচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সোমবার রাত থেকে দফায় দফায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনাজুড়ে।

    বুধবার সকাল থেকে দিনভর আকাশ কালো মেঘে ঢেকে ছিল। দফায় দফায় বৃষ্টি চলেছে সুন্দরবনের উপকূল এলাকায়। সঙ্গে দমকা বাতাস। আজ, বৃহস্পতিবারও বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে জেলাজুড়ে।

    সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে দমকা বাতাস বইতে পারে। জলোচ্ছ্বাস হতে পারে নদী ও সমুদ্রে। ফলে সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের।

    এ দিন ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানার পক্ষ থেকে মৎস্যজীবীদের সতর্ক করতে মাইক প্রচার করা হয়। গত ১৪ জুন দু’মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ইলিশ ধরার জন্য সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল প্রায় দু’হাজার ট্রলার।

    বেশ কিছু ট্রলার প্রায় ১০০ টনের বেশি ইলিশও পেয়েছিল। কিন্তু হাওয়া অফিসের সতর্কবার্তা পেয়ে ট্রলারগুলি আবার সুন্দরবনের নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, সাগরের ঘাটে ফিরে এসেছে।

    মরশুমের শুরুতেই নিম্নচাপের মুখে পড়ে বেশ কিছুটা লোকসান হতে চলেছে মৎস্যজীবীদের। সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, ‘দু’মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সবে ট্রলার সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল।

    কিছু ইলিশও পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু আবহাওয়ার সতর্কবার্তা পেয়ে সব ট্রলার আবার ঘাটে ফিরে আসছে। আমাদের কিছুটা লোকসানের মুখে পড়তে হলো।’

    তবে খুশির খবর মৌসুমি বায়ু ঢুকে গিয়েছে। বৃষ্টি বাড়লেই সমুদ্রের জলের নোনা ভাব আরও কেটে যাওয়ার পর আরও বেশি পরিমাণে ইলিশ মিলবে। এ বছর মরশুমের শুরুতেই সমুদ্রে ইলিশের দেখা মিলেছে।

    ফিরে আসা এক ট্রলারের মাঝি মৈনাক দাস বুধবার বিকেলে ফ্রেজারগঞ্জ ঘাটে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘সমুদ্রে উত্তাল ঢেউ চলছে। এই ঢেউয়ের মধ্যে জাল পাতাই দুষ্কর। গত কয়েক বছরের খরা কাটিয়ে এবার শুরুতেই সমুদ্রে ভালোই ইলিশ মিলেছিল।

    কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার জেরে ইলিশ ধরাতে কিছুটা হলেও তাল কাটলো। তবে যেভাবে বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়েছে, এটাই ইলিশ ধরার ক্ষেত্রে উপযোগী আবহাওয়া।’

    তবে সমুদ্রের জলের নোনা ভাব কাটাতে আরও বৃষ্টির প্রয়োজন রয়েছে। এর মধ্যে যদি ভালো বৃষ্টিপাত হয়, সঙ্গে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ স্বাভাবিক হয় তা হলে ইলিশের ঝাঁক আরও বেশি মিলবে বলে আশা পোড় খাওয়া মৎস্যজীবীদের।

    সুন্দরবন এলাকায় ঝড়-বৃষ্টির দাপট বেশি থাকবে আগামী কয়েকদিন। অন্যদিকে টানা বৃষ্টিতে তাপমাত্রাও অনেকটা কমেছে। ভ্যাপসা গরম থেকে রেহাই মিলেছে জেলাবাসীর। তবে টানা বৃষ্টি হলে জেলার নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকছে।

  • Link to this news (এই সময়)