• ডেনমার্ক থেকে নয়া যান আনল পুরসভা, শৌচ-বর্জ্য থেকেই তৈরি হবে সার, ধাপায় ইউনিট
    বর্তমান | ১৯ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আধুনিক যুগে জঞ্জাল শুধু ফেলে দেওয়ার জিনিস নয়। বর্জ্য হয়ে উঠছে সম্পদ। কলকাতা পুরসভা পচনশীল বর্জ্য থেকে সার, অপচনশীল ও প্লাস্টিকজাত জঞ্জালের পুনর্নবীকরণ ইউনিট করছে। বায়ো গ্যাস, অপ্রচলিত বিদ্যুৎ তৈরির পথে হাঁটছে। এবার শৌচ-বর্জ্যকেও ‘সম্পদ’ হিসেবে ব্যবহার করতে চলেছে পুরসভা। এর থেকে তৈরি হবে সার। এ কাজের জন্য দু’টি বিশেষ ধরণের যান কিনেছে পুরসভা। নাম, ‘অনসাইট স্লাজ ডিওয়াটারিং ভেহিকল’। তা ডেনমার্ক থেকে এসেছে। গাড়ি কেনা ও এ কাজের জন্য ধাপায় ইউনিট তৈরি মিলিয়ে প্রায় ৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে খবর।

    বুধবার যান দু’টির উদ্বোধন করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুরসভার জঞ্জাল সাফাই এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার। পুরসভা সূত্রে খবর, গাড়ি কেনার আগে সার্ভে হয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে, শহরে বহু বাড়ির শৌচালয়ের সঙ্গে নিকাশি নালার সংযোগ নেই। বর্তমানে বহু জায়গাতেই বাড়ি বা পুরনো বহুতলে সেপটিক ট্যাঙ্ক রয়ে গিয়েছে। শহরের ৬০ শতাংশ বাড়ির শৌচালয় নিকাশি নালার সঙ্গে যুক্ত এবং ৪০ শতাংশ বাড়িতে এখনও সেপটিক ট্যাঙ্ক আছে। বেশি সেপটিক ট্যাঙ্ক রয়েছে ছয়, ১১ এবং ১৫ নম্বর বরো এলাকায়। এই ট্যাঙ্ক থেকে সেচপুলের মাধ্যমে ট্যাঙ্কে করে শৌচ-বর্জ্য তোলা হতো। তা পরিশোধনের ব্যবস্থা ছিল না। এবার পদক্ষেপ নিল পুরসভা। 

    পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই গাড়ি পাইপের মাধ্যমে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে শৌচ-বর্জ্য সংগ্রহ করবে। গাড়িতে থাকা ট্যাঙ্কের ভিতর বিভিন্ন ধাপে তা পরিশোধন হবে। ‘পলিমার ডোজ’ দেওয়ার ফলে প্রথমে ‘স্লাজ’ বা থকথকে বস্তু আলাদা হয়ে পড়বে। পড়ে থাকবে জল বা তরল অংশ। সেই জল অনেকাংশে জীবাণুমুক্ত। তা সরাসরি নিকাশি নালায় ফেলা যায়। বাকি ‘স্লাজ’ চলে যাবে ধাপায়। সেখানে তৈরি করা হয়েছে ‘লাইম স্টেবিলাইজেশন ইউনিট’। সেখানে ‘স্লাজ’ বিভিন্ন ধাপে ট্রিটমেন্ট করে তৈরি হবে জৈব সার। তা গাছের বা ফসল ফলানোর কাজে ব্যবহৃত করা যাবে। পুরনো গাড়িগুলির (সেচপুল কার) পাইপ ৮০ ফুট লম্বা। নতুন গাড়ির পাইপ ৩৬০ ফুট লম্বা এবং একই সময়ে সাত হাজার ৫০০ লিটার ধারণ ক্ষমতার তিনটি সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে শৌচবর্জ্য সংগ্রহ করে।
  • Link to this news (বর্তমান)