• ৯৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে জলেশ্বর-চন্দনেশ্বর নয়া লাইনকে ‘স্পেশাল প্রজেক্ট’ ঘোষণা করল রেল
    বর্তমান | ১৯ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: জমিজটে দীঘা-জলেশ্বর নতুন রেলপথের কাজ আপতত অনিশ্চিত। ২০১০-’১১সালে ৪১কিলোমিটার ওই নতুন রেলপথের জন্য ৩৫২কোটি ৬৫লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু, এরাজ্যে সাত কিলোমিটার এলাকায় রেললাইন পাতার জন্য প্রয়োজনীয় জমি মিলছে না। সেজন্য রেলবোর্ড ওই প্রকল্পকে ঠাণ্ডাঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে। রামনগর থানার বাগমারি গ্রামের বাসিন্দা সৌম্যজিৎ বেরার আরটিআইয়ের জবাবে গত ১৭জুন রেলের পক্ষ থেকে এমনটাই জানানো হয়েছে।

    তবে দীঘা-জলেশ্বর নতুন রেললাইন অনিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর জলেশ্বর থেকে চন্দনেশ্বর নতুন রেললাইন নিয়ে সক্রিয় হয়েছে রেল। ওই নতুন রেলপথের জন্য ৯৩৮কোটি ৭২লক্ষ টাকার এস্টিমেট তৈরি হয়েছে। গতবছর ১৮এপ্রিল সেই এস্টিমেট রেল বোর্ডে জমা পড়েছে। এবছর ১৯ফেব্রুয়ারি রেল বোর্ডের কাছে এসংক্রান্ত ফা‌ইনাল রিপোর্ট জমা পড়েছে। তাতে দ্রুত জলেশ্বর-চন্দনেশ্বর রেললাইনের অনুমোদন মিলবে বলে রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ওই প্রজেক্টকে ‘স্পেশাল রেলওয়ে প্রজেক্ট’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রেলবোর্ড প্রয়োজনীয় অর্থ অনুমোদন করার ২৪মাসের মধ্যেই জমি নেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডার ইস্যু করার তিন বছরের মধ্যে ওই কাজ শেষ করার টার্গেট আছে বলেও রেল জানিয়েছে।

    খড়্গপুর থেকে চেন্নাইগামী রেললাইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হল জলেশ্বর। এই জলেশ্বরের সঙ্গে দীঘা লাইন জুড়ে গেলে পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা সহজে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ু যাতায়াত করতে পারতেন। তাঁদের খড়্গপুর স্টেশনে যাওয়ার দরকার পড়ত না। তাছাড়া, চন্দনেশ্বরে প্রচুর সংখ্যক ভক্ত যাতায়াত করেন। তাঁদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এই লাইনের দাবি দীর্ঘদিনের। এছাড়া, দীঘার সঙ্গে জলেশ্বর যুক্ত হলে পাঁশকুড়া-দীঘা লাইনের গুরুত্ব কয়েকগুণ বাড়ত। অনেকগুলি সুবিধার কথা মাথায় রেখেই ২০১০-’১১সালে দীঘা-জলেশ্বর রেললাইন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। এজন্য ৩৫২কোটি ৬৫লক্ষ টাকা বরাদ্দও হয়েছিল।

    এরাজ্যে প্রায় সাত কিলোমিটার রেললাইনের জন্য প্রয়োজনীয় জমি মিলছে না। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৪সালে জমি সমস্যার বিষয়টি রেলকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়। তারপর ২০১৯সালে সেপ্টেম্বর মাসে রেলবোর্ড দীঘা-জলেশ্বর নতুন রেললাইন প্রকল্প স্থগিত করে দেয়। এরফলে পূর্ব মেদিনীপুরের সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্ভাবনা রইল না। কাজু, পান, মাছ, ফুল ও সব্জি সহ বহু পণ্যসামগ্রী অন্ধ্র ও তামিলনাড়ুর সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের সড়কপথে ট্রান্সপোর্ট হয়। রেললাইন তৈরি হলে এধরনের পণ্য কম খরচে এবং দ্রুত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো।  

    জানা গিয়েছে, দীঘা-জলেশ্বর রেল লাইন অনিশ্চিত হতেই ওড়িশা সরকার জলেশ্বর-চন্দনেশ্বর লাইনের জন্য রেলবোর্ডকে চিঠি দিয়ে ফ্রিতে জমি দেওয়ার কথা জানায়। এরপরই ২০২৪সালে ৮অক্টোবর রেল ‘স্পেশাল প্রজেক্ট’ ঘোষণা করে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করে দিয়েছে। এজন্য এস্টিমেট বানানোর কাজ শেষ। সেই এস্টিমেট অনুমোদনের জন্য রেলবোর্ডে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত অনুমোদন চলে আসবে বলেও রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)