• শহরের একাধিক এলাকা জলমগ্ন, ক্ষোভের মুখে পুরসভার চেয়ারম্যান
    বর্তমান | ১৯ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: টানা বর্ষণের জেরে বেআব্রু হয়ে উঠল শহরের নিকাশি ব্যবস্থা। এক রাতের বৃষ্টিতেই পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের একাধিক এলাকা জলমগ্ন হল। কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমরসমান জলে ভোগান্তির শিকার হলেন বাসিন্দারা। এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় বুধবার পুরুলিয়া-বাঁকুড়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন ১৬নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশ। পরিস্থিতির তদারকি করতে গিয়ে নিজের ওয়ার্ডেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন খোদ পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান।

    বুধবার সকালে ঘুম থেকে উঠেই কার্যত চমকে গিয়েছিলেন পুরুলিয়ার হুচুকপাড়া, নিমটাঁড়, সূর্যসেনপল্লি, অম্বরীশপল্লি, রামপদ কলোনি,  কার্তিকডি, ডুমুরতল, পুলিস কলোনি সহ বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। এক রাতের বৃষ্টিতেই এইসব এলাকার জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বহু বাড়িতেই নর্দমার নোংরা জল ঢুকে যায়। শহরের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, শহরের যেসব নিচু এলাকা দিয়ে আগে বৃষ্টির জল বেরিয়ে যেত সেখানে ঘরবাড়ি তৈরি হয়েছে। কিন্তু জল কীভাবে বের হবে সেদিকে গুরুত্ব দেয়নি পুরসভা। তাছাড়া শহরের অধিকাংশ নিকাশি নালার অবস্থা বেহাল। প্লাস্টিক, থার্মোকলে বুজে থাকে সবসময়। বহু নিকাশি নালার অস্তিত্ব সঙ্কটে। এর ফল যা হওয়ার তাই হচ্ছে। 

    পুরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, বর্ষার কথা ভেবে শহরের হাইড্রেনগুলি আমরা সবে পরিষ্কার করতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই বর্ষা চলে আসায় এই সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এদিকে, বেহাল নিকাশির জেরে সূর্যসেনপল্লির বাসিন্দাদের ‘নরক যন্ত্রণা’র মধ্যে পড়তে হয়। পরিস্থিতির তদারকি করতে যান স্থানীয় কাউন্সিলার সুনয় কবিরাজ। পরবর্তীতে পাম্প চালিয়ে জল বের করা হয়। সুনয়বাবু বলেন, সূর্যসেন পল্লির ড্রেনেজ সিস্টেম ভালো নয়। বর্ষার জল যাতে সাহেববাঁধে ফেলে নিকাশি ব্যবস্থা সচল করা যায় সেই প্রস্তাব এমইডিকে দিয়েছি। আশা করছি শীঘ্রই এর সমাধান হবে।  

    জলযন্ত্রণার জেরে এদিন ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় পুরুলিয়া শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধুডাঙা এলাকার বাসিন্দাদের। সারা শহরের জল এই এলাকা দিয়েই পাস হয়। যদিও বেহাল নিকাশির জেরে গলা অবধি জল জমে যায় এলাকায়। সুরাহার দাবি তুলে এদিন দুপুরে ওভারব্রিজের কাছে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন বাসিন্দারা। এর জেরে বহু গাড়ি আটকে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় যায় সদর থানার পুলিস। এই বেহাল অবস্থার দায় অবশ্য রেলের উপরেই ঠেলেছেন পুরসভার চেয়ারম্যান নবেন্দু মাহালি। তিনি বলেন, রেলের নতুন লাইনের জেরে এই সমস্যা। পুরনো নিকাশি নালা বন্ধ করে দিয়ে ছোট নালা বসিয়ে দিয়েছে। ফলে যে পরিমাণ জল বের হওয়ার কথা তা হচ্ছে না। সেকারণে এই সমস্যা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলার সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)