• ইজরায়েলে আটকে শালবনীর গবেষক, অ্যালার্ম বাজলেই ঢুকে পড়ছেন স্থানীয় বাঙ্কারে
    বর্তমান | ১৯ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শালবনী: ইরান-ইজরায়েলের যুদ্ধের ছায়া যেন শালবনীতেও! যুদ্ধ বিমান, ক্ষেপণাস্ত্রের হানাহানিতে ক্ষতবিক্ষত দু’টি দেশ। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ইজরায়েলে আটকে পড়েছেন শালবনীর গবেষক অনিরুদ্ধ বেরা। তাঁর বাড়ি ভাউদি গ্রামে। ইরানের হামলায় এখন বিধ্বস্ত ইজরায়েলের তেল আভিভ। সেখানেই রয়েছেন অনিরুদ্ধবাবু। ক্যান্সার বায়ো ফিজিক্স নিয়ে গবেষণার কাজ করছেন। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবারের লোকেরা। কৃতী সন্তানের সুষ্ঠুভাবে ফিরে আসার প্রার্থনা করছেন গ্রামবাসীরাও। 

    অনিরুদ্ধবাবু নিজেও বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। মাথার উপর সারাক্ষণ চক্কর কাটছে যুদ্ধবিমান কিংবা ড্রোন। আবার কখনও ক্ষেপণাস্ত্রের ঝলকানি। মোবাইল ফোনে বিশেষ অ্যালার্ম বাজলেই আশ্রয় নিতে হচ্ছে বাঙ্কারে। এদিন ইজরায়েল থেকে অনিরুদ্ধবাবু বলছিলেন, ‘এমনিতে ঠিক রয়েছি। কিন্তু অ্যালার্ম বাজলেই দুশ্চিন্তা হচ্ছে। এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই ভালো। বাড়ির লোকরাও চিন্তা করছে। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বোঝা যাচ্ছে না। এখানকার সাধারণ মানুষ ও প্রশাসন বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। খাবারের খুব বেশি সমস্যা নেই।’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘মোবাইলে বিশেষ অ্যাপ দেওয়া রয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র অ্যাক্টিভেট হলেই অ্যাপের মাধ্যমে বিপদ সংকেত বোঝা যায়। এরপর তীব্র জোরে অ্যালার্ম বাজলেই পাঁচ মিনিটের মধ্যে বাঙ্কারে ঢুকে যেতে হচ্ছে।

    এদিন গ্রামবাসীরা বলছিলেন, ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলেন অনুরুদ্ধবাবু। বাবা অসীম কুমার বেরা একটি প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। মা রাখি বেরা গৃহিণী। গ্রামের স্কুল থেকেই পড়াশোনা করেছেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ স্কুল (বালক বিভাগ) থেকে। গবেষক হওয়ার ইচ্ছে ছিল অনিরুদ্ধবাবুর। ওড়িশা রাজ্যের নাইসার থেকে তিনি পড়াশোনা করেন। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে তিনি ইজরায়েলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। 

    এদিন তিনি বলেন, গবেষণার কাজ শেষ করেই ফিরে আসার ইচ্ছে রয়েছে। সংবাদপত্র পড়ে বিভিন্ন খবরের উপর নজর রাখছি। ইতিমধ্যেই ইজরায়েলের হানায় ইরানের সেনা ও জওয়ানদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়েছে। হাত গুটিয়ে বসে নেই ইরানও। তারাও বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজরাইলের উপর। 

    ভাউদি গ্রামের বাসিন্দা চন্দন দাস বলেন, ‘ভারত সরকারের উচিত দেশের নাগরিকদের দুই দেশ থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা। যে কোনও সময় বড় বিপদ ঘটতেই পারে।’ অনুরুদ্ধবাবুর বাবা বলেন, ‘ছেলে যুদ্ধ আবহের মধ্যে রয়েছে। বাবা হিসেবে দুশ্চিন্তা তো হয়ই। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। শান্তি ফিরবে।’  ইজরায়েলে অনিরুদ্ধ বেরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)