• আজ কালীগঞ্জ বিধানসভা উপ নির্বাচন, নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনি
    বর্তমান | ১৯ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনির যে নতুন নিয়ম চালু করেছে নির্বাচন কমিশন, তা অবাক করেছে জেলা পুলিসের বড়কর্তাদের। গত লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভা কেন্দ্রে স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৭। উপনির্বাচনে তা বেড়ে হয়েছে ৬৩। এই সংখ্যা বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে কমিশনের নতুন নিয়ম। সেই নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বুথের একজন বাসিন্দার বিরুদ্ধেও যদি গ্রেপ্তারির ওয়ারেন্ট থাকে এবং সে পলাতক হয়, তবে সেই বুথ স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত হবে। এমনকী সেই গ্রেপ্তারির ওয়ারেন্ট গার্হস্থ্য হিংসার মতো সামান্য কারণে হলেও। স্পর্শকাতর বুথ নির্ধারণে নির্বাচন কমিশনকে এই পন্থা অবলম্বন করতে আগে দেখা যায়নি। এতদিন সাধারণত অতীত অশান্তির রেকর্ড আছে, এমন বুথগুলিকেই স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হতো। কিন্তু এবারে কমিশনের নতুন নিয়মে স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা একলাফে প্রায় চারগুণ বেড়ে গিয়েছে। ৩০৯টি বুথের মধ্যে ৬৩টি স্পর্শকাতর। 

    চিহ্নিত সবক’টি বুথেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার জন্য ১৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ১৫০০ পুলিস ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।‌ বিধানসভা উপনির্বাচনে এত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিস মোতায়েন করাও অভূতপূর্ব। কালীগঞ্জ থানার পুলিস ইতিমধ্যেই দেড়শোর বেশি ওয়ারেন্ট প্রাপ্ত আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে। কমিশনের লক্ষ্য, ‘মডেল’ হিসেবে চিহ্নিত কালীগঞ্জ উপনির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে সংঘটিত করা। 

    নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এবার স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে একটি অভিনব ও কার্যকর পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। কমিশনের সূত্র জানা গিয়েছে, যেসব বুথ এলাকায় ওয়ারেন্ট প্রাপ্ত পলাতক আসামি রয়েছে, সেগুলোকেও স্পর্শকাতর হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ১২৮ ধারা সিআরপিসি ধারা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট প্রদত্ত রক্ষণাবেক্ষণের আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে কারও বিরুদ্ধে যদি ওয়ারেন্ট জারি হয়ে থাকে, তাহলেও সেই ব্যক্তি যে বুথের আওতাভুক্ত, সেই বুথটিকে স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। তবে এই নিয়মের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, একজন মহিলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে রক্ষণাবেক্ষণের আদেশ পেলেন, কিন্তু স্বামী অন্যত্র পালিয়ে গেলেন। তখন ১২৮ ধারা অনুযায়ী ওয়ারেন্ট জারি করা হবে স্বামীর বিরুদ্ধে। এই অপরাধের জন্যও সংশ্লিষ্ট বুথটি স্পর্শকাতরের তালিকায় চলে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, শ্যাওড়াতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২১৪ নম্বর বুথ, বল্লভপাড়া জগন্নাথ আশ্রম হাই স্কুলের ২৭৩ নম্বর বুথ, কানুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৬৪ নম্বর বুথ, কামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০৬ নম্বর পাগলাচণ্ডী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩৭ নম্বর, তেজনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ নম্বর এবং পানিঘাটা হাইস্কুলের ১৫৩ ও ১৫৪ নম্বর বুথগুলিকে স্পর্শকাতর বুথের তালিকায় রাখা হয়েছে। কারণ এখানে ১২৮ সিআরপিসি ধারায় ওয়ারেন্ট প্রাপ্ত আসামি রয়েছেন।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)