• নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন! গণপিটুনিতে মৃত্যু অভিযুক্তের
    বর্তমান | ১৯ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ, তার প্রতিক্রিয়ায় গণপিটুনিতে মৃত্যু অভিযুক্তের। খুন এবং পাল্টা খুনের এই ঘটনা পরম্পরায় উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছে পাত্রসায়র। মঙ্গলবার রাত থেকেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযুক্তের বাড়িতে হামলাও চালানো হয় বলে অভিযোগ। অপরদিকে নাবালিকার উপর নৃশংস অত্যাচারের পর খুনের ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে পাত্রসায়র থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অন্যদিকে নাবালিকার উপর অত্যাচারের পর খুনের ঘটনার নিন্দা করলেও সন্দেহের বশে তাঁদের ছেলেকে পিটিয়ে মারার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যরা। যদিও তাঁরা এ ব্যাপারে পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাননি।

    বিষ্ণুপুরের এসডিপিও সুপ্রকাশ দাস বলেন, নিহত নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ হয়েছে। এছাড়াও অভিযুক্তের মৃত্যুর ঘটনায় একটি সুয়োমোটা মামলা করা হয়েছে। দুই ঘটনারই তদন্ত চলছে। মৃতদেহ দু’টির ময়নাতদন্ত করানো হয়েছে। গ্রামে পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। 

    পাত্রসায়র থানা এলাকার বাসিন্দা চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী মঙ্গলবার দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর খেলতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে মেয়েটির পরিবারের লোকজন। বহু খোঁজাখুঁজির পর সন্ধ্যার ঠিক আগে গ্রামের পাশে একটি ঝোপের মধ্যে নাবালিকার বিবস্ত্র মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায়। নাবালিকারই জামা ছিঁড়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। গ্রামেরই বাসিন্দা লালু লোহার নামে এক যুবক ওই নাবালিকাকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছিল— এমন দৃশ্য গ্রামের কোনও একজন দেখেছেন। সেই খবর চাউর হতেই উত্তেজিত জনতার রোষ লালুর উপর গিয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, প্রমাণ লোপাটের জন্য গ্রামের ধারে একটি খোলা মাঠে গর্ত করে দেহ পুঁতে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগও ওঠে লালুর বিরুদ্ধে। এরপরেই লালুকে তার ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে শুরু হয় গণপিটুনি। উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তের বাড়িতে চড়াও হয়। তার বাড়িতে অগ্নি সংযোগও করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে পাত্রসায়র থানা থেকে পুলিস পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। নাবালিকার দেহটি উদ্ধার করা হয়। সেই সঙ্গে জখম লালুকে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা চলাকালীন সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। বুধবার সকালেও গ্রামে চাপা উত্তেজনা ছিল। মৃত নাবালিকার পিসি বলেন, ওইটুকু একটা শিশুকে এভাবে নির্মমভাবে অত্যাচার করে কেউ খুন করতে পারে, তা আমরা ভাবতেও পারছি না। আমরা চেয়েছিলাম দোষীর ফাঁসি হোক। শুনছি সে মারা গিয়েছে। 

    অন্যদিকে মৃত লালু লোহারের এক দাদা অসিত লোহার বলেন, নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। তাকে খুনের ঘটনার আমি অত্যন্ত নিন্দা জানাই। কিন্তু ওই ঘটনার জন্য কেবলমাত্র সন্দেহের উপর ভিত্তি করে আমার ভাইকেও মেরে ফেলা হয়েছে। আমি চাই পুলিস উপযুক্ত তদন্ত করে প্রকৃত দোষীকে খুঁজে বের করে শাস্তি দিক। 
  • Link to this news (বর্তমান)