• মোজমপুরে লিচু বাগান থেকে উদ্ধার ছ’টি আগ্নেয়াস্ত্র, ধৃত ১
    বর্তমান | ১৯ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কালিয়াচক: মোজমপুরে অশান্তির মাঝেই অস্ত্র উদ্ধারে বড়সড় সাফল্য পেল মালদহ জেলা পুলিস। মঙ্গলবার গভীর রাতে গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে মোজমপুরের অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারি মণিরুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়  কালিয়াচক থানার একটি বিশেষ দল। এরপরই মণিরুলের বাড়ির পিছনের লিচুবাগানের ভিতরে একটি গোপন আস্তানা থেকে চারটি সেভেন এমএম পিস্তল এবং দুটি পাইপগান উদ্ধার করে কালিয়াচক থানার বিশেষ দলটি। পাশাপাশি মণিরুলের বাড়ির চিলেকোঠা থেকে ছোট বাক্স উদ্ধার হয়। যার মধ্যে ম্যাগাজিন সহ ৩৫টি কার্তুজ ছিল বলে পুলিস সূত্রে খবর। এরপরই মণিরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

    পুলিসের  দাবি, মণিরুল দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত। বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে সে অস্ত্র তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় পাচার করে। তার তৈরি অস্ত্র চোরাকারবারিদের সাহায্যে বাংলাদেশেও চলে যেত। পুলিসের কাছে খবর থাকলেও এতদিন তার নাগাল পাওয়া যায়নি। প্রতিবারই সে পুলিসের চোখে কোন‌ও না কোনও ভাবে ধুলো দিয়ে পালাত। এছাড়া তার বাড়িতে কয়েকবার অভিযান হলেও পুলিস সেই সময় কোন‌ও অস্ত্র  উদ্ধার করতে পারেনি। প্রাথমিকভাবে পুলিসের ধারণা,আগে মণিরুল নিজের বাড়িতে অস্ত্র মজুত করে রাখত না। অস্ত্র তৈরি করে তা বাড়ির লিচু বাগানে লুকিয়ে রাখত। মণিরুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে মুঙ্গের গ্যাংয়ের। মুঙ্গেরের অস্ত্র কারবারিদের নিয়ে এসে সে অস্ত্র তৈরি করে বিক্রি করত। এতেই তার রমরমা কারবার। গত মার্চের শেষের দিকে মোজমপুরের বাসিন্দা আগ্নেয়াস্ত্র পাচারকারী হাসান শেখকে কলকাতা পুলিসের এসটিএফ বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ সহ শিয়ালদহ স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। সে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ফেরি করার আড়ালে অস্ত্রের কারবার চালাত। এমনকী নেপালেও যেত সে। বর্তমানে হাসান জেলে।

    সূত্রের খবর, এই মণিরুলের সঙ্গে হাসানের সম্পর্ক পুরনো। মণিরুলের তৈরি অস্ত্রই হাসান বিভিন্ন জায়গায় পাচার করত। আর তা থেকে যা আয় হত, খরচ বাদ দিয়ে লভ্যাংশ অর্ধেক করে নিত তারা। হাসানের গ্রেপ্তারের পর মণিরুলের নাম উঠে আসে। এরপর কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকে মণিরুল। কিন্তু, ফের‌ মোজমপুরের কুখ্যাত দুই সমাজবিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডগোল বাধে। কয়েকটি শ্যুটআউটের ঘটনার পর দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রের চাহিদা বাড়ে। দুই গোষ্ঠীকেই অস্ত্র সাপ্লাই করত এই মণিরুল। গণ্ডগোলের মাঝেই দুই গোষ্ঠী অস্ত্র চাইলে মণিরুল এলাকায় আসে। অস্ত্র বিক্রির জন্যই লিচু বাগানে মজুত করেছিল মণিরুল বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। কালিয়াচক থানার আইসি সুমন রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, ধৃত মণিরুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে।  উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও ধৃতকে নিয়ে পুলিস আধিকারিকরা।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)