সংবাদদাতা, বালুরঘাট: সামাজিক মাধ্যমে নাবালিকাদের টার্গেট! প্রথমে ‘বন্ধু’ বানানো। তারপর মেসেজ বা ফোনে কথা। ক্রমে প্রেমের অভিনয়। কয়েকমাস যেতে না যেতেই ফুঁসলিয়ে নাবালিকাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভিনরাজ্যে। সেখানে তাদের আটকে রাখা হচ্ছে, নয়তো পাচার করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর অভিযোগের ভিত্তিতে ‘নিখোঁজ’ নাবালিকাদের খুঁজতে কালঘাম ছুটছে পুলিসের। বালুরঘাট থানায় একাধিক নাবালিকার নিখোঁজের ঘটনায় অবাক পুলিস আধিকারিকরা। যেমন কয়েক মাস আগে এমনই এক নাবালিকাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল যুবক। ওই নাবালিকাকে ঝাড়খণ্ড থেকে উদ্ধার করা হলেও অধরা ছিল মূল অভিযুক্ত। ঝাড়খণ্ড সহ বিভিন্ন রাজ্যে হানা দিয়েও অভিযুক্তকে ধরা যাচ্ছিল না। অবশেষে বেঙ্গালুরু থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে এনেছে বালুরঘাট থানার পুলিস। সেই সঙ্গে আরও এক নাবালিকাকে বীরভূম থেকে উদ্ধার করেছে পুলিস। একইদিনে ২৫ বছর বয়সী এক নাবালিকাকেও পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে পুলিস উদ্ধার করে।
এবিষয়ে বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাস বলেন,ভিনরাজ্যে নাবালিকাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও এক নাবালিকা এবং এক বধূকে ভিনজেলা থেকে আজ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিস সূত্রে খবর, বেঙ্গালুরু থেকে ধৃত তরুণের নাম পিন্টু হেমরম। তার বাড়ি ঝাড়খণ্ডের কুসুমঘটি থানা এলাকায়। এক বছর আগে বালুরঘাটের রাজুয়ার এক নাবালিকাকে অপহরণ করে ভিনরাজ্যে নিয়ে যায়। প্রথমে ঝাড়খণ্ডে রাখলেও পরে নাবালিকাকে অন্য রাজ্যে নিয়ে যায়। নাবালিকাকে পাচার করে দেওয়ার চক্রান্ত ছিল ওই যুবকের। নাবালিকাকে ঝাড়খণ্ড থেকে উদ্ধার করা গেলেও জায়গা বদল করছিল অভিযুক্ত পিন্টু। মোবাইলের লোকেশন ধরে তাকে বেঙ্গালুরু থেকে পুলিস গ্রেপ্তার করে এনেছে।
গত ৫ মে বালুরঘাট ব্লকের ডাকরা গ্রামের এক নাবালিকাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভিনজেলার এক যুবকের বিরুদ্ধে। নাবালিকাকে বীরভূম থেকে উদ্ধার করা হলেও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিস। দুই নাবালিকাই ঘর ছেড়েছিল ফেসবুকে পরিচয় হওয়ার পর। আর এতেই বাড়ছে দুশ্চিন্তা। অপরিণত বয়সে ‘প্রেমের’ জেরে নাবালিকাদের ঘরছাড়া এবং এর পরিণতিতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে অভিভাবকদেরও।
শুধু নাবালিকারাই নয়, বধূরাও ঘর ছাড়ছেন। বালুরঘাট ব্লকের বিরোহিনি গ্রামের এক বধূকেও পুলিস পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে উদ্ধার করেছে। পরিবারের অভিযোগ,বধূকেও ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতলব ছিল অভিযুক্তের। বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিস ও পরিবারের সহায়তায় ফিরে আসেন বধূ।