• বাগডোগরা থেকে গ্যাংটক কপ্টার পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত সিকিমের
    বর্তমান | ১৯ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: পর্যটনের প্রসারে গত বছর মার্চে চালু করা কপ্টার পরিষেবা আচমকা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল সিকিম সরকার। আমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা, কেদারনাথের পথে কপ্টার ভেঙে পুণ্যার্থীদের মৃত্যুর ঘটনার পর সিকিম সরকারের এই সিদ্ধান্ত বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। 

    যদিও সিকিমের পর্যটন দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, ২৬ আসনের ওই কপ্টারে (এমআই-১৭২) যাত্রী না হওয়ার কারণে লোকসানের বহর বাড়ছিল। যা রাজ্য সরকারের উপর বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। সেইসঙ্গে আবহাওয়া খারাপের কারণে কপ্টার উড়তে না পারা তো আছেই। সবমিলিয়ে বাগডোগরা থেকে গ্যাংটক ডবল ইঞ্জিনের ওই কপ্টার পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

    সিকিম প্রশাসন সূত্রে খবর, যে সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে রাজ্যের সরকার ওই কপ্টার চালাচ্ছিল, তাদের একমাসের নোটিস দিয়ে পরিষেবা বন্ধের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ১০ আসনের কোনও কপ্টার চালানো যায় কি না, ভেবে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে সিকিমের পর্যটন দপ্তরের তরফে। 

    সড়কপথে শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটকের দূরত্ব ১২০ কিমি। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ওই পথ যেতে গাড়িতে প্রায় চার ঘণ্টা লেগে যায়। যানজট কিংবা রাস্তা খারাপ থাকলে গন্তব্যে পৌঁছতে আরও দেরি হয়। ফলে পর্যটকরা যাতে কম সময়ে সিকিমে পৌঁছতে পারেন, গ্যাংটকের কাছেই বুরতুক হেলিপ্যাডের পরিকাঠামো উন্নত করে এমআই-১৭২ কপ্টার পরিষেবা চালু করে সিকিম। মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং উদ্বোধন করেন কপ্টার পরিষেবার। বলা হয়েছিল, বাগডোগরা-গ্যাংটক রুটে চলা ছাড়াও সিকিমে জয় রাইডের জন্য ভাড়া করা যাবে ওই কপ্টার। কিন্তু গত ১৪ মাসে সাড়া মেলেনি। উপরন্তু কপ্টারের রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ সংশ্লিষ্ট সংস্থা সিকিম সরকারের কাছে দাবি করেছে ২০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে দু’দফায় ১৭ কোটি টাকা মিটিয়েছে সরকার। 

    সিকিমের পর্যটন ও অসামরিক বিমান চলাচল দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সিএস রাও জানিয়েছেন, সিকিমে যাঁরা বেড়াতে আসেন, সড়কপথে যাতায়াতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। ফলে কপ্টারে যাত্রী হচ্ছে না। তাছাড়া, খারাপ আবহাওয়ার কারণে কপ্টার উড়তে না পারলে পর্যটকদের সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর বিষয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যায়। 

    শিলিগুড়ির পর্যটন ব্যবসায়ী সম্রাট সান্যালের দাবি, প্রথমত প্রচারের অভাব রয়েছে। তাছাড়া কপ্টার যে সময়ে উড়বে, তার নিশ্চয়তা দিতে হবে পর্যটকদের। না হলে একবার টিকিট কাটার পর কপ্টার না উড়লে সময় নষ্ট, এবং টাকা ফেরত পেতে অপেক্ষা করার ঝক্কি পোহাতে চাইবেন না পর্যটকরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)