শুধু সাইবার প্রতারণা নয়, জমির বেআইনি কারবারের টাকাও নিয়ন্ত্রণ করতেন অভিযুক্ত
বর্তমান | ১৯ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: আন্তর্জাতিক সাইবার ক্রাইম সিন্ডিকেটের অন্যতম মাথা শিলিগুড়ির সেই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ)। অভিযুক্তের ডেরায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হানার পর এমনটাই মনে করছেন গোয়েন্দারা। সেই সঙ্গে তাঁদের ধারণা, শুধু অনলাইন প্রতারণা নয়, শিলিগুড়ি ও সিকিমের জমি মাফিয়া সহ বিল্ডারদের অবৈধ টাকাও নিয়ন্ত্রণ করত ওই সিন্ডিকেট। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছে ইডি। তাদের আতশকাচের নীচে আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী রয়েছে বলে খবর।
শিলিগুড়ি শহরে ওই সিএ’র বাড়ি। ২৪ ঘণ্টা আগে মঙ্গলবার তাঁর বাড়ি সহ ছ’জায়গায় দিনভর অভিযান চালায় ইডি। তারা সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলি থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি সংগ্রহ করেছে বলে খবর। এই ঘটনা নিয়ে শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, শুধু অনলাইন প্রতারণার টাকা ‘মিউল’ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হতো তা নয়, এই পন্থায় অভিযুক্তরা জমির বেআইনি কারবারের টাকাও সাদা করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এজন্য বিপুল অঙ্কের টাকা ছোট ছোট অঙ্কে ভাগ করে ওই অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলেই সন্দেহ। শিলিগুড়ি ও আশপাশ এলাকায় জমির বেআইনি কারবার এবং রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায় রমরমা হওয়ায় এমন মনে করা হচ্ছে।আর শুধু শিলিগুড়ি বা সিকিম নয়, গোটা দুনিয়া জুড়ে সক্রিয় ছিল সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, আড়াই বছর আগে দুবাইয়ে পাড়ি দেন অভিযুক্ত সিএ। বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে ‘মিউল’ ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্ট খুলতেন তিনি। সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলি নিয়ন্ত্রণ করতেন। এর মাধ্যমেই তিনি আন্তর্জাতিক সাইবার ক্রাইম সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়েন। এরসঙ্গে গুজরাত ও ফরিদাবাদের কিছু চক্রী রয়েছে। এই সিন্ডিকেটের পর্দা প্রথম ফাঁস করে রাজ্য পুলিস। যদিও, কয়েক বছর আগে অভিযুক্তের সংস্থায় অভিযান চালায় আয়কর বিভাগও। সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা পেয়েছেন। অভিযুক্ত সিএ একটি কনসালটেন্সি সংস্থা খুলেছিলেন। এভাবেই তারা জাল বিস্তার করে। অভিযুক্ত সিএ’র সঙ্গে শিলিগুড়ি ও সিকিম সহ বিভিন্ন রাজ্যের বড় ব্যবসায়ীর যোগাযোগ ছিল। সেই ব্যবসায়ীরাও এখনও ইডির আতশকাচের নীচে। তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখছে ইডি।