নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: ফের আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার। এবার ক্রেতা সেজে তালগাছের গোঁড়া থেকে মাটি খুঁড়ে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করল পুলিস। রায়গঞ্জ থানার পুলিস এই ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতের নাম সঞ্জয় বর্মন (১৮)। বাড়ি বাঙ্গালবাড়ি ভাতসিয়ায়।
পুলিসের বক্তব্য, ধৃত আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রেতা। রায়গঞ্জের পুলিস সুপার সানা আখতার বলেন, ধারাবাহিকভাবে পুলিস অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে চলেছে। লাগাতার নজরদারি চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন সময় গোপন সূত্র মারফত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তাতে আইনভঙ্গ করে যারা আগ্নেয়াস্ত্র রাখছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিস ব্যবস্থা নিচ্ছে। মঙ্গলবার রাতেও রায়গঞ্জ থানার পুলিস অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র সহ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার ধৃতকে জেলা আদালতে পাঠানো হয়। সরকারি আইনজীবী নীলাদ্রি সরকারের বক্তব্য, অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তকে পুলিস নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায়। শুনানি শেষে অভিযুক্তকে চারদিনের পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিস সূত্রে দাবি,নির্দিষ্টভাবে একটি তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সঞ্জয়ের ব্যাপারে খোঁজ পায় তারা। জানা যায়, সে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির জন্য খদ্দের খুঁজছে। এরপরই পুলিস ক্রেতা সেজে সঞ্জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আগ্নেয়াস্ত্র কিনতে চায়। পুলিসের পাতা সেই ফাঁদে পা দেয় অভিযুক্ত। তবে সঞ্জয় সেই সময় অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে যায়নি। এই অবস্থায় যথেষ্ট ধৈর্য্যের পরিচয় দেয় পুলিস। ক্রেতারূপী পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে সঞ্জয় যায় বাঙ্গালবাড়ি ভাতসিয়া এলাকায় নিজের বাড়িতে। সেখানে একটি তালগাছের গোড়া থেকে মাটি খুঁড়ে একটি আগ্নেয়াস্ত্র পুলিস উদ্ধারের পর সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনায় পুলিসও অভিযুক্তের অস্ত্র লুকিয়ে রাখার পেশাদারি কায়দা দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি। একবারে একটি গুলি ফায়ার হয়। এগুলি স্থানীয়স্তরে দুষ্কৃতীরা মানুষকে ভয় দেখানো, অপরাধমূলক কাজ করার জন্য ব্যবহার করে থাকে। এক্ষেত্রে সঞ্জয় অস্ত্র বিক্রেতা হিসেবে কাজ করেছে। তাই সঞ্জয়ের পিছনে আর কারা রয়েছে, কোথা থেকে এই অস্ত্র সে পেল, তা জানার জন্য তদন্ত চালাচ্ছে পুলিস।
রায়গঞ্জ পুলিস জেলায় মাঝেমধ্যেই অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। রায়গঞ্জ থানাও একের পর এক অস্ত্র উদ্ধার করেছে। অস্ত্র সহ গ্রেপ্তারও হয়েছে কয়েকজন। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, বিভিন্ন সূত্র ধরে পুলিস মঙ্গলবার সঞ্জয়ের হদিশ পেয়ে যায়। তার দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্মের কথা সামনে আসে। পুলিস সূত্রে দাবি, মাত্র ১৮ বছর বয়স হলেও কয়েক বছর আগে পুলিসের খাতায় নাম উঠেছে সঞ্জয়ের। আগেও হেমতাবাদ থানা এলাকায় অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার হয়েছিল সে। সেবারও অভিযুক্তের কাছে অস্ত্র পাওয়া যায়। তারপরও ফের অস্ত্র রাখার মতো অপরাধে তার নাম জড়াল।