• ‘আজকের রাতটা খুব গুরুত্বপূর্ণ...’ সাইরেন বাজতেই বাঙ্কারে ছুটলেন তেল আভিভে গবেষণারত মেদিনীপুরের অনিরুদ্ধ
    এই সময় | ১৯ জুন ২০২৫
  • ‘পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার দিকে এগোচ্ছে। আজকের রাতটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাইরেন বাজছে। আমাদের বাঙ্কারে প্রবেশ করতে হবে।’ কথা বলতে বলতেই বাঙ্কারের দিকে ছুটলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির যুবক অনিরুদ্ধ বেরা। ইরান ও ইজ়রায়েলের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দু’দেশেই অনেক ভারতীয় নাগরিকরা আটকে পড়েছেন। ইজ়রায়েলে গবেষণা করতে গিয়ে সেখানে আটকে পড়েছেন অনিরুদ্ধ বেরা। বুধবার রাতে সেখান থেকেই ‘এই সময় অনলাইন’-এর সঙ্গে কথা বললেন প্রবাসী ভারতীয় অনিরুদ্ধ।

    কী বলছেন অনিরুদ্ধ?

    অনিরুদ্ধ ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ইজ়রায়েলের বিখ্যাত শহর তেল আভিভে রয়েছেন। ‘তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়’ (Tel Aviv University)-এ ‘ক্যান্সার বায়োফিজিক্স’ নিয়ে তিনি গবেষণা করছেন। বুধবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ২৭ বছরের অনিরুদ্ধ ‘এই সময় অনলাইন’-কে বলেন, ‘আমি ও বিভিন্ন দেশের অনেক গবেষক ছাত্রছাত্রীই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি সেন্ট্রাল তেল আভিভের একটি আবাসনে ভাড়া থাকি। প্রত্যেকেরই সিঙ্গেল রুম। নিজেরাই রান্না করি। কিন্তু, গত শুক্রবার থেকে কার্ফু জারি হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। দোকানপাট সকালের দিকে নির্দিষ্ট সময়ে খুলছে। সারাদিন অন্তত তিন থেকে চারবার সাইরেন বাজছে।’

    অনিরুদ্ধ আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে রান্না করে খাওয়া সম্ভব নয়। তাই শুকনো ও রেডিমেড খাবার মজুত করে রাখছি। তাই দিয়েই চলছে। বুধবার সকালে আমাদের কাছে খবর এসেছে, বৃহস্পতিবার থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে। তবে সবটাই বুধবার রাতের উপর নির্ভর করছে। এখনই বাড়ি যাবার কোন পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে যা পরিস্থিতি, ভারত সরকার উদ্ধার অভিযান শুরু করলেই চলে যাব।’

    ছেলের দুশ্চিন্তায় কী বলছেন অনিরুদ্ধর বাবা?

    জঙ্গলমহল শালবনীর ভাউদি গ্রামের মেধাবী ছাত্র অনিরুদ্ধ বাবা-মার একমাত্র সন্তান। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তাঁর বাবা-মার। অনিরুদ্ধর বাবা অসীম বেরা পেশায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। এ দিন ‘এই সময় অনলাইন’-কে অসীম বেরা বলেন, ‘উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা সবকিছুই তো রয়েছে। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতে কিছু করারও নেই। যতক্ষণ না ভারত সরকার ওদের উদ্ধার করে নিয়ে আসছে ততক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। ফোনে ওর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। এটুকুই এখন আমাদের কাছে অক্সিজেন। বুধবার ফোনে ছেলে জানিয়েছে, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। আমরা টিভি-মিডিয়া-সমাজমাধ্যমে চোখ রেখে বসে রয়েছি। সেই সঙ্গে মনে প্রাণে চাইছি, ইজ়রায়েল থেকেও যাতে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আসা হয়।’

    শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষের বক্তব্য

    শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ বলেন, ‘আমরা চাইছি যাতে অনিরুদ্ধ তাড়াতাড়ি ফিরে আসে। অসীম বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’ তৃণমূলের যুব নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপ সিংহ বলেন, ‘অনিরুদ্ধর সঙ্গে মেসেঞ্জারে কথা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে বলে জানিয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)