তপন দেব: পুলিসি প্রহরায় আলিপুরদুয়ারের প্রায় ৬টি দোকানে টেন্ডার দিয়ে তৈরি হচ্ছে জগন্নাথের প্রসাদ (Digha Jagannath's Prasad)। এত বড় টেন্ডার পেয়ে খুশি মিষ্টি বিক্রেতারা। আজ, বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টি মাথায় আলিপুরদুয়ারের পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ কর বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জগন্নাথের সেই প্রসাদ (Jagannath's Prasad) পৌঁছে দিচ্ছেন। আর এই প্রসাদ নিয়েই আলিপুরদুয়ার জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
তরজা
বিজেপির জেলা সভাপতি মিঠু দাস অভিযোগ করে বলেন, মানুষের করের টাকা দিয়ে হিন্দুদের মন জয় করতে স্থানীয় মিষ্টির দোকানে মিষ্টি তৈরি করে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে জগন্নাথের প্রসাদ বলে চালানোর চেষ্টা করছে। তৃণমুল কংগ্রেসের রাজ্যনেতা মৃদুল গোস্বামী বলেন, বিজেপির কাছ থেকে হিন্দুত্ব শিখতে হবে না। ওরা আগে প্যারেড গ্রাউন্ড ঠিক করে দিক। টেন্ডার পাওয়া মিষ্টির দোকানের মালিক বাপ্পা ঘোষ বলেন, বড় অর্ডার। দায়িত্ব পেয়ে খুশি।
রেশনের মাধ্যমে প্রসাদবিলি
প্রসঙ্গত, কদিন আগেই জানা গিয়েছিল, দীঘায় জগন্নাথদেবের প্রসাদ বিলি হবে রেশনের মাধ্যমে। হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার রেশন ডিলারদের নিয়ে মিটিং করেছিলেন মহকুমা শাসক। শহরবাসী রেশনের মাধ্যমে পাবেন জগন্নাথদেবের প্রসাদ। তখনই বিজেপি বিধায়ক জানিয়েছিলেন, তিনি এই প্রসাদ গ্রহণ করবেন না।
২৫ থেকে ২৬ হাজার বাড়িতে
সদর মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা বলেছিলেন, প্রসাদ কী ভাবে বিলি হবে, সেটা নিয়ে রেশন ডিলারদের সঙ্গে একটা মিটিং হয়েছে। প্রথমে যে রকমভাবে আমাদের বরাদ্দ এসেছে, তাতে হুগলি চুঁচুড়া পুরসভা এলাকায় ২৫ থেকে ২৬ হাজার বাড়িতে আমরা এই প্রসাদ পৌঁছে দিতে পারব। সেই টার্গেট করেই আমরা এগোচ্ছি। একসঙ্গে অনেক প্রসাদ তৈরি করলে সেটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জগন্নাথের ছবি এবং ডালা যা প্যাকেজিং হবে, সেটা এখনও এসে পৌঁছয়নি, তাই কবে থেকে বিলি করা শুরু হবে, সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়।
রেশন ডিলারদের বক্তব্য
রেশন ডিলারদের খাদ্য সরবরাহ দফতর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেই অনুযায়ী তারা কাজ করবে। এটা ভগবানের প্রসাদ, কার রেশন কার্ড আছে কার নেই-- সেটা বিষয় নয়, যাঁরা নিতে ইচ্ছুক, তাঁরা সকলেই পাবেন। রেশন দোকানটা একটা মাধ্যম, সেখানে মানুষ রেশন নিতে আসেন, সেই কারণেই রেশন দোকানটাকে বেছে নেওয়া হয়েছে বিতরণের জন্য। সমস্ত ব্লক এবং পুরসভার আলাদা আলাদা টার্গেট দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী বিলিবণ্টন হবে। রেশন ডিলার কল্যানেশ্বর সাহা বলেন, আমরা খুশি, জগন্নাথ দেবের প্রসাদ মানুষের কাছে পৌঁছোতে পারব। আমরা চাইছি, এক সঙ্গে সব দোকানে এই প্রসাদ পৌঁছক। যাতে সবাই একসঙ্গে দিতে পারে। এতে মানুষের সুবিধা হবে। আমাদের রেশন দোকানে যথেষ্ট চাপ রয়েছে, তা সত্ত্বেও আমরা এই কাজটা করব।
নবান্নে প্রস্তুতি-বৈঠক
এবার প্রথম দীঘায় জগন্নাথ ধামে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রথযাত্রা। পদপিষ্টের ঘটনা এড়াতে এক কিমি পথ জুড়ে থাকবে রথের রশি! রথের দিনে মুখ্যমন্ত্রী নিজে থাকবে দীঘায়। তিনি সোনার ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার পর শুরু হবে জগন্নাথের রথযাত্রা। এসব নিয়ে কদিন আগেই প্রস্তুতি-বৈঠক হল নবান্নে। ভক্তরাও রথের রশি স্পর্শ করতে পারবেন, আবার পদপিষ্টের ঘটনা এড়ানো যাবে-- মুখ্য়মন্ত্রীর নির্দেশেই দীঘায় তাই রথে রশির দৈর্ঘ্য এক কিমি হতে চলেছে। পুলিসি ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা নজরদারির জন্যও মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। দীঘায় সমস্ত হোটেলে বুকিং হয়ে গিয়েছে। রথের প্রস্তুতি বৈঠকে হোটেলে ভাড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সমস্যা সমাধানে হোটেল মালিকদের সঙ্গে পর্যটন দফতরকে বৈঠক করতে বলা হয়েছে।