তোলাবাজির আতঙ্কে জেরবার ব্যবসায়ীরা। পাঁচ লক্ষ টাকা তোলা দিতে রাজি না হওয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে কাঁঠাল গাছে বেঁধে মারধরের অভিযোগ। নির্যাতনে আতঙ্কে প্রাণ বাঁচাতে ঘরছাড়া ব্যবসায়ী পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার কালিয়াচক থানার ফতেখানি বাঙালিপাড়া এলাকায়। নিরুপায় হয়ে ওই ব্যবসায়ী পরিবার নিয়ে দ্বারস্থ হন মালদা জেলা পুলিশ সুপারের। ব্যবসায়ীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, মালদা জেলা বণিক সভাও। তাদের হুঁশিয়ারি, ‘পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানাব।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত ব্যবসায়ীর নাম রহিম বিশ্বাস। তাঁর অভিযোগ, গত ২০২২ সালে কালিয়াচকের ত্রাস জহুরুল খান তাকে অপহরণ করে। পুলিশি তৎপরতাতেই মুর্শিদাবাদ জেলার সুতি থানা এলাকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ । কিন্তু কিছু দিন আগে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর এলাকায় ফিরতেই আবার সন্ত্রাস শুরু করেছে জহুরুল খান।
আক্রান্ত ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, থানায় করা অপহরণের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হয় তাঁর কাছে। গত শনিবার বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে জোর তুলে নিয়ে গিয়ে কাঁঠাল গাছে বেঁধে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। কোন মতে প্রাণে বেঁচে বাড়ি ফেরেন ওই ব্যবসায়ী। এরপর থেকে আতঙ্কে ঘর ছাড়া ওই ব্যবসায়ী পরিবার। বুধবার ওই ব্যবসায়ী তাঁর পরিবারকে নিয়ে মালদা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানান।
এ দিকে এই বিষয়ে মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, 'আমরা পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করব, যাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। আর পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিত আকারে জানাব।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জহুরুল খান একসময় তৃণমূলের দাপুটে নেতা ছিল। জেলার একাধিক বিধায়ক এবং নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর ছবি রয়েছে। তবে যদিও সমাজবিরোধী কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ায় তৃণমূল দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে খবর। আর এ নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনীতিক বিতর্ক। এই ঘটনায় শাসকদলকে তীব্র কটাক্ষ বিজেপির। পদ্মশিবিরের তরফ থেকে কটাক্ষ, ‘দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের ছত্রছায়ায় থাকে, তাই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে না।’ পাল্টা বিজেপিকে কটাক্ষ তৃণমূলের, ‘সমাজবিরোধীদের আমরা প্রশ্রয় দিই না।’