বাবা বকা দেওয়ায় বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছিল ১৪ বছরের নাবালিকা। কিন্তু স্টেশনে যে তার জন্য বড় বিপদ অপেক্ষা করছে, তা বুঝতে পারেনি। কুলতলির এক যুবক ওই নাবালিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে এবং তাকে ধর্ষণ করে। মঙ্গলবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। বুধবার সাজা ঘোষণা করেন বারুইপুর আদালতের বিচারক। তিনি যাবজ্জীবন কারাবাস এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। একই সঙ্গে নির্যাতিতাকে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দিয়েছেন।
কুলতলির ওই বাসিন্দার বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যে তাকে ছেড়ে চলে যায় স্ত্রী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, হুগলি জেলার বাসিন্দা ১৪ বছরের নাবালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করার। তদন্তে জানা যায়, নাবালিকাকে তার বাবা বকেছিল। তাই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সে।
এ দিকে স্টেশনে ওই যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় তার। নাবালিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে সে। এর পর নাবালিকাকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, তাকে পুরীতে দাদা, বৌদির বাড়ি নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্তের দিদি ও জামাইবাবু এই ঘটনায় ইন্ধন দিত বলে অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, নাবালিকাকে বৌবাজারের যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছিল ওই যুবকের বিরুদ্ধে। কুলতলি এলাকার সমাজকর্মী শক্তিপদ মণ্ডল বিষয়টি জানতে পারে এবং কুলতলি থানায় ফোন করেন মেয়েটিকে উদ্ধার করেন। ২০২২ সালের মে মাসে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বারুইপুর পকসো আদালতে মামলার বিচারপর্ব শুরু হয়। ঘটনায় সাক্ষী দেয় মোট ৭ জন। সরাকারি আইনজীবী অতসী হালদার সাহা এই মামলায় নাবালিকার পক্ষে সওয়াল করেন।
আড়াই বছরের মাথায় বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়াও ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেন বিচারপতি। অনাদায়ে ১ বছরের জেলের সাজা দেন। মেয়েটিকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ।