• অভিভাবক-বিভ্রান্তি, ৪২ দিন হোমে রইল হুগলির আড়াই বছরের শিশু
    এই সময় | ১৮ জুন ২০২৫
  • অভিভাবকত্ব নিয়ে বিভ্রান্তির জেরে আড়াই বছরের শিশুকে হাসপাতাল থেকে সোজা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল হোমে। ৪২ দিনের টানাপড়েন শেষে বাবা-মা ফিরে পেলেন সন্তানকে। হুগলির চুঁচুড়ার ঘটনা।

    গত ৫ জুন চকবাঁশবেড়িয়ার আড়াই বছরের ওই শিশুকন্যা হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ দিকে ওই শিশুর দিদিমা ওডিশায় হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ায়, মেয়েকে হাসপাতালে রেখে সেখানে যান শিশুর মা। ২ দিনের মধ্যে ওই শিশুকন্যা সুস্থ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়।

    মা ছিলেন না কাছে। বাবা কাজে গিয়েছিলেন। শিশুর জেঠু তাকে হাসপাতাল থেকে আনতে যান। কিন্তু জেঠু আইনিমতে অভিভাবক না হওয়ায় ওই শিশুকে ছাড়তে চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উল্টে তড়িঘড়ি চাইল্ড লাইনে বিষয়টি জানানো হয়।

    চাইল্ড লাইনও দ্রুত পদক্ষেপ করে। শিশুটিকে নিয়ে গিয়ে তারা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকে দেয়। কমিটি তাকে নবগ্রাম হোমে রাখার ব্যবস্থা করে। এর পরেই শিশুর মা ও বাবা সন্তানকে ফিরে পেতে আবেদন জানান। কিন্তু নানা প্রক্রিয়াগত কারণে তা আটকে থাকে।

    শিশুর বাবা বাঁশবেড়িয়া গ্যাঞ্জেস জুট মিলের শ্রমিক। তিনি জুটমিলের এক শ্রমিক নেতার দ্বারস্থ হন। এর পরেই বাঁশবেড়িয়ার ভাইস চেয়ারম্যান শিল্পী চট্টোপাধ্যায়কে বিষয়টি জানানো হলে তিনি হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আইনজীবী নির্মাল্য চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলেন। আইনি পরামর্শ নিয়েই শিশুকে ফিরে পাওয়ার ব্যবস্থা হয়।

    আইনজীবী নির্মাল্য চক্রবর্তী চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির (CWC) চেয়ারপার্সনের সঙ্গে কথা বলেন। আইনজীবী নির্মাল্য চক্রবর্তী হুগলির জেলাশাসক মুক্তা আর্যর সঙ্গে কথা বলেন। নির্মাল্য চক্রবর্তী জানান, শিশুটি তার জেঠু-জেঠিমার ঘরেই বেশিরভাগ সময়ে থাকে। তাদের মা, বাবা বলেও ডাকে। হাসপাতালে ভর্তির পরে তাকে যখন ছুটি দেওয়া হয়, সেই জেঠুই তাকে আনতে গিয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালের খাতায় বাবার নাম ছিল। তা থেকেই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।

    CWC-র চেয়ারপার্সন মণিদীপা ঘোষ বলেন, ‘রিলিজ় করার সময়ে হাসপাতাল সন্দেহ করেছিল যে বাবা, মা হ্যান্ডওভার নিচ্ছে না। হাসপাতাল জানিয়েছিল, বাচ্চাটাকে যারা নিতে এসেছে, বাচ্চার বায়োলজিক্যাল পেরেন্টস নন। যাঁরা বাচ্চাকে নিতে গিয়েছিলেন, তাঁরা বোধহয় স্বীকারও করেছিলেন তা। পরে বাবা, মা এসে যথাযথ কাগজপত্র দেখিয়ে বাচ্চাটিকে নিয়ে গিয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)