শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: ফের আম পাড়াকে কেন্দ্র করে রক্তারক্তি! এবার ঘটনাস্থল রায়গঞ্জ। গুরুতর আহত এক তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। তার চোখে মারাত্মক আঘাত লেগেছে। পড়ুয়াকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাতে জখম ছাত্রের চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। ঘটনায় চাঞ্চল্য এলাকায়।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুরে। স্কুল ছুটির শেষে বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল স্থানীয় পাঁচভায়া প্রাথমিক স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির নাজিম আলি। রাস্তার ধারের গাছে ঢিল ছুড়ে আম পাড়ে। আর তাতে ‘আমাদের বাগানে’র দাবি করে সাদ্দাম আনসারি নামে বালক স্কুলব্যাগ থেকে কম্পাসের কাঁটা বের করে আচমকা বন্ধুর বা চোখে সজোরে ফুঁড়ে দেয়। গলগল করে রক্ত ঝড়তে থাকে। তীব্র যন্ত্রণায় বছর তেরো বালক মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ঘটনায় ভয় পেয়ে পালিয়ে যায় বছর বারোর পড়ুয়া সাদ্দাম। খবর দেয় পরিবারকে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় বালককে উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে জখম ছাত্রের বাবা মহম্মদ আজারুদ্দিন রায়গঞ্জ মেডিক্যালে ছুটে আসেন। এরপরই জরুরি তৎপরতায় জখম পড়ুয়ার অস্ত্রোপচার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরের অদূরে জগদীশপুর পঞ্চায়েতের পাঁচভায়া এলাকার ঘটনা জানাজানি হতেই রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল সংলগ্ন পথের ধারের আম বাগানের মালিক সহপাঠী সাদ্দাম আনসারির বাবা তহিদুর রহমান আনসারি। বেলা দু’টো নাগাদ স্কুল ছুটির পর দুই বন্ধু বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় রাস্তার পাশের আমগাছে ঢিল ছুড়ে একটি আম পাড়ে নাজিম। ব্যস! তাতেই স্কুলব্যাগ থেকে কম্পাসের স্টিলের সুচালো কাঁটা বের করে সরাসরি সহপাঠীর বা চোখে ঢুকিয়ে দেয়।
জখম ছাত্রের বাবা আজারুদ্দিন বলেন, “একটা আমের জন্য আমার ছেলের সারা জীবনের জন্য এতবড় ক্ষতি করে দিল।” এব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রের বাবা তহিদুর রহমান আনসারি তথা ওই আম বাগানের মালিকের কোন বক্তব্য মেলেনি। মেডিক্যাল হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ অসিতকুমার বিশ্বাস বলেন, “চোখের রেটিনা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চোখের মণি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সমস্যা বেশি। চোখে ছানিও পড়তে পারে। তবে ৪৮ ঘণ্টার আগে কিছুই বলা সম্ভব নয়।” এ ঘটনায় আক্রান্ত পরিবারের তরফে থানায় অভিযোগ জানানো হবে কি না, তা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট জানাননি।