• এআ‌ইয়ের কল্যাণে বীরভূমে বাঘ-সিংহের লড়াই জমজমাট
    বর্তমান | ১৮ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: বোলপুরের মহামিছিলে অনুব্রত মণ্ডল। আচমকা একটি বিশাল রয়েল বেঙ্গল টাইগার এসে তাঁকে আদর করছে। অবাক হয়ে দেখছেন সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী।‌ দিন কয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছিল। এরপর একই কায়দায় বানানো ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সিংহের আদর খাচ্ছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। অর্থাৎ বাঘ-সিংহের লড়াই। এআইয়ের দৌলতে বানানো এমন ভিডিওতেই মজেছেন যুযুধান দুই নেতার অনুগামীরা। দু’টি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ঝড়ের বেগে। রাজ্য রাজনীতিতে দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা হিসেবে পরিচিত অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। অন্যদিকে জনপ্রিয়তার নিরিখে নানুরের তৃণমূল নেতা কাজল শেখও কোনও অংশে কম নন। একই দলের হয়ে রাজনীতি করলেও তাঁদের ঠান্ডা লড়াইয়ের কথা জেলার আট থেকে ৮০ সকলেই জানে। রাজনীতির ময়দানে অনুব্রতবাবুকে অনেকে বাঘ বলে থাকেন। তার পাল্টা কাজল সাহেবকেও সম্প্রতি সিংহের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। তবে, ব্যাপারটি শুধু অনুগামীদের মুখে মুখে নয়, এবার সোশ্যাল মিডিয়াতেও বাঘ-সিংহের লড়াই চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনীতির মঞ্চে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতার ঠান্ডা লড়াই সর্বজনবিদিত। তবে, দলের পক্ষে সেটি ভালো বিষয় নয় বলে, রাজ্য নেতৃত্ব দু’জনকেই সংযত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু, অনুগামীরা সংযত হচ্ছে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে চলছে নানা রসিকতা, মিম, ভিডিও। এ-বলে আমায় দেখ, তো ও বলে আমায়! কার পাল্লা ভারী, তা নিয়েও জোর টানাপোড়েন চলছে। 

    প্রসঙ্গত, গত ২৬মে বোলপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল তৃণমূলের মহামিছিল। সেখানে অনুব্রতকে নিয়ে এআইয়ের মাধ্যমে বাঘের সঙ্গে একটি ভিডিও ক্লিপিং বানিয়েছিলেন তাঁর অনুগামী আমিনুল ইসলাম ওরফে সেন্টু। সিউড়ির পুরন্দরপুরের বাসিন্দা আমিনুল তৃণমূলের আইটি সেলের সঙ্গে  যুক্ত। তিনি বলেন, কেষ্টদাকে ভালোবেসেই ভিডিওটা বানিয়েছি। কারণ, রাজনীতিতে তাঁকে সবাই বাঘ বলেই সম্মোধন করে। অন্যদিকে, সিংহের সঙ্গে কাজল শেখের ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন সিউড়ির ভট্টাচার্যপাড়ার বাসিন্দা কৌশিক দে। যিনি পেশায় পুরসভার ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কলকাতায় কর্মরত। তিনি বলেন, কাজলদার নেতৃত্বে বীরভূমে যেভাবে উন্নতি হচ্ছে, তাই তাঁকে সিংহের সঙ্গে তুলনা করেছি।  তবে জেলার রাজনীতিতে এই ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রভাব স্পষ্ট। যদিও দুই পক্ষই তৃণমূল দলকেই সমর্থন করছেন। তবুও ভিতরে ভিতরে চলছে শক্তি প্রদর্শন। রাজনীতির এই প্রতিযোগিতা জনগণ রস পাচ্ছেন। অনুব্রতবাবু এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া না দিলেও তাঁর ঘনিষ্ঠরা বলেন দাদা শুধু জেলার উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন। কে, কী করল তা নিয়ে তিনি চিন্তিত নন। অন্যদিকে, কাজল সাহেব বলেন, অনুগামীরা, তাঁদের মতো ভেবেছেন। তবে, বেশ মজা পেয়েছি।
  • Link to this news (বর্তমান)