বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক কেলেঙ্কারি: আজ প্রাক্তন ভিসি কি সিআইডি দপ্তরে
বর্তমান | ১৮ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: আজ, বুধবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সিআইডি অফিসে হাজির হন কি না, তা জানতে মুখিয়ে রয়েছে শিক্ষামহল। তিনি হাজির হলে তদন্তকারীদের সামনে কী জবাব দেবেন, তা জানতেও উৎসাহ রয়েছে। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি আসবেন ধরে নিয়েই তদন্তকারীরা প্রশ্নমালা তৈরি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি খবর রাখতেন কি না, তা জানতে চাওয়া হবে। কোন অ্যাকাউন্টে কত টাকা রয়েছে, সেটা তিনি জানতেন কি না, তাও জানতে চাওয়া হবে। প্রায় দু’কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে যাওয়ার বিষয়টি কবে তিনি জানতে পেরেছিলেন, সেই প্রশ্নও তাঁর কাছে রাখা হবে। তাঁকে প্রায় ২০টি প্রশ্ন করা হতে পারে। উত্তরে সন্তুষ্ট না হলে ফের তলব করা হতে পারে।
সিআইডি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আধিকারিককে এরমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আগামী দিনে আরও কয়েকজনকে ডাকা হবে। এছাড়া, ব্যাঙ্কের আধিকারিকদেরও ফের ডাকা হতে পারে। দু’বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় দু’কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় এখনও বড় কোনও মাথা গ্রেপ্তার হয়নি। যাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছিল, তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা জেরায় একাধিক মাস্টারমাইন্ডের নাম জানিয়েছে। সিআইডি এখনও তাদের পাকড়াও করতে পারেনি।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মী দীর্ঘদিন ধরে ‘ফেরার’ রয়েছে। সিআইডি এখনও তাকে হাতে পায়নি। তাকে গ্রেপ্তার করা হলে এই ঘটনা জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সংগঠনের সভাপতি অরিন্দম মল্লিক বলেন, প্রথম থেকেই আমরা এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলাম। তখন কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। সেই সময় বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হলে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে ন্যাক পরিদর্শন করতে এসেছিল। তাদের মূল্যায়নেও এই বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে গিয়েছে। অনেকের ধারণা ছিল, এই বিশ্ববিদ্যালয় এবার ‘এ প্লাস’ তকমা পাবে। কিন্তু, সেটা তো দূর অস্ত, বিশ্ববিদ্যালয় ‘এ’ তকমাও ধরে রাখতে পারেনি। তা নিয়েও সমালোচনার ঝড় বইছে। এর মধ্যে প্রাক্তন ভিসিকে তলব করায় সমালোচনার ঝাঁঝ আরও বেড়ে গিয়েছে।
এক আধিকারিক বলেন, একসময় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত পড়াশোনার জন্যই মূলত চর্চায় থাকত। এখন সেদিন গিয়েছে। দুর্নীতি, ন্যাকের মূল্যায়নে পিছিয়ে পড়া বিষয়গুলিই এখন প্রধান হয়ে গিয়েছে। তবে প্রায় দু’কোটি টাকা তছরুপের ঘটনায় আদৌ রাঘব বোয়ালরা গ্রেপ্তার হবে কি না, তা নিয়ে অনেকেই সংশয়ে রয়েছেন।