ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস ঘিরে বাড়ছে উদ্বেগ, মাইথন-পাঞ্চেত থেকে ছাড়া হবে বিপুল পরিমাণ জল, বন্যার শঙ্কা
বর্তমান | ১৮ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: বর্ষার আগেই দক্ষিণবঙ্গজুড়ে ফের বন্যার উদ্বেগ শুরু হয়েছে। সৌজন্যে, ডিভিসির জল। নিম্নচাপের জেরে দক্ষিণবঙ্গজুড়ে সোমবার থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। মঙ্গলবারও তা চলছে। কিন্তু, আসল উদ্বেগ ঝাড়খণ্ডের প্রবল বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস নিয়ে। আবহাওয়া দপ্তরের মতে, বুধবার ব্যাপক বৃষ্টিপাত হবে পড়শি রাজ্যে। মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধারে বাড়তি জল ধরা রয়েছে। তাই আবহাওয়ার পূর্বাভাস পেতেই বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা থেকেই মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে ৪৯হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। দামোদর ভ্যালি রিভার রেগুলেশন কমিটি থেকে জানানো হয়েছে, কমলা সতর্কতা জারি করার কথা ভাবা হচ্ছে। যার ফলে প্রয়োজন হলে এক লক্ষ কিউসেক হারে জল ছাড়া হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে দামোদর তীরবর্তী নিচু এলাকাগুলির। দামোদর ভ্যালি রিভার রেগুলেশন কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি সঞ্জীব কুমার বলেন, মাইথন ও পাঞ্চেত দু’টি জলাধারেই অতিরিক্ত জল ছিল। প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় কোনওরকম ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব নয়। সবুজ সতকর্তা জারি করা হয়েছে। প্রয়োজনে কমলা সতর্কতা জারি করা হবে। যাতে এক লক্ষ কিউসেক হারে জল ছাড়া যায়।
বর্ষা শুরুর আগেই ফের জল যন্ত্রণায় নাকাল হওয়ার সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গে। কয়েকমাস আগেই আসানসোলে প্রবল জল সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছিল। আসানসোল পুরসভার তরফে ডিভিসিকে চিঠি লিখেও মাইথন, পাঞ্চেত থেকে বাড়তি জল ছাড়া সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে দুর্গাপুর ব্যারেজ সংস্কারের কাজ চলেছে। ব্যারেজের নীচ দিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করার জন্য মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়া সম্ভব হয়নি। এই অবস্থায় বর্ষার আগেই জল জমে মাইথনের জলস্তর ৪৭২.৩৪ ফুট পর্যন্ত উঠে এসেছে। পাঞ্চেতে জল রয়েছে ৪০৭.২৮ ফুট। অন্য সময়ে বর্ষার আগে যা জলস্তর থাকে তার তুলনায় এটি অনেকটাই বেশি। রবিবার থেকে জলস্তর কমাতে জল ছাড়া শুরু করে ডিভিসি। এখন মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে ২২হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। কিন্তু, বুধবার ঝাড়খণ্ডে অতিবৃষ্টির সতর্কতাই হঠাৎ উদ্বেগ বাড়িয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকেই মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে যথাক্রমে ১৯হাজার এবং ৩০হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হবে। বুধবার প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হলে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়বে, তার আভাস দিয়েই রেখেছে কর্তৃপক্ষ। দামোদর নদে যথেষ্ট স্রোত থাকায় সোমবার হীরাপুর থানা এলাকায় একাধিক অস্থায়ী বাঁশের সেতু ভেঙে গিয়েছে। মঙ্গলবার নদীঘাটে গিয়ে দেখা গিয়েছে, এখনও সেখানে নৌকা চলাচল শুরু হয়নি। যার জেরে ওই এলাকায় নদী পারাপার সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন দু’পারের বাসিন্দারা।