• জাল নথি: তদন্ত শুরু করল গোয়েন্দা বিভাগ, স্টুডিওর কম্পিউটার থেকে মিলল বহু ছবি
    বর্তমান | ১৮ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: জাল নথি তৈরি চক্র কাণ্ডের তদন্তের ভার নিল শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগ। ধৃত সাতজনকে হেফাজতে নিয়ে লাগাতার জেরা শুরু করেছে পুলিস। যে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তদের, সেখানে থাকা স্টুডিওর কম্পিউটারে মিলেছে বিভিন্ন মানুষের পাসপোর্ট সাইজের ছবি। 

    প্রাথমিকভাবে পুলিস জানতে পেরেছে,বেআইনিভাবে বাংলাদেশ থেকে এপারে লোক নিয়ে আসার এই চক্রের নেটওয়ার্ক খুবই সক্রিয়। এদের কেউ এজেন্ট হিসেবে ওপার থেকে লোক নিয়ে আসার কাজ করত। কেউ আবার মোটা টাকার বিনিময়ে ভাড়া বাড়ি খুঁজে দেওয়ার কাজ করছিল। কেউ জাল নথি সহ সমস্ত ভারতীয় নথির বিষয়টি দেখত। আবার টাকার বিনিময়ে পুরো ব্যাপারটি সংগঠিত করে দিত। তবে সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত এই দলটি ঠিক কতজনকে এভাবে বাংলাদেশ থেকে এপারে নিয়ে এসে ভুয়ো নথি তৈরি করে দিয়েছে, তা জানতেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। এই চক্রে মোট কতজন সদস্য কাজ করে, সেবিষয়েও বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া শুরু করেছেন পুলিস অফিসাররা। 

    শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব আমাদের ডিটেক্টিভ ডিপার্টমেন্টের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ধৃত সাতজনকে আদালতে তুলে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে। 

    সোমবার শিলিগুড়ির কাছে ফকদইবাড়ির একটি স্টুডিওতে হানা দেয় মেট্রোপলিটন পুলিসের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও ভক্তিনগর থানার পুলিস। ওই স্টুডিওতে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যানকার্ড, জন্ম শংসাপত্র, কাস্ট সার্টিফিকেট বানানো হতো। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। স্টুডিওতে থাকা কম্পিউটার থেকে একাধিক তথ্য জোগাড় করেছেন তদন্তকারীরা। পাওয়া গিয়েছে বহু মানুষের পাসপোর্ট সাইজ ফটো। যা দিয়ে একাধিক জাল নথিপত্র তৈরি করা হয়েছে। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এক একটি নথি তৈরি করতে অনেক টাকা নিত অভিযুক্তরা। প্রথমে ৩৫-৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে সীমানা পার করিয়ে এপারে আনা হতো। এরপর গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি ভাড়া খুঁজে দিয়ে থাকার ব্যবস্থা করত। তারপর জাল নথি তৈরি করে দিত চক্রের সদস্যরা। অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশি নাগরিকদের মাধ্যমে ওদিক থেকে এপারে আসতে আগ্রহীদের তথ্য সংগ্রহ করা হতো। পরবর্তীকালে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এদেশে নিয়ে আসার কাজ করত এজেন্টরা। তবে এখনও পর্যন্ত মোট কতজনকে এপারে নিয়ে আসা হয়েছে তার সঠিক হিসেব পাওয়া যায়নি। সেই তথ্য জোগাড় করতে পুলিস ধৃতদের জেরা করছে।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)