‘আর বাঁচার ইচ্ছা নেই’, স্বামী, পুত্র ও পুত্রবধূর ‘নির্যাতনে’ স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানালেন কাকদ্বীপের বৃদ্ধা!
আনন্দবাজার | ১৭ জুন ২০২৫
সব থেকেও তাঁর যেন কিছুই নেই! স্বামী, সন্তান, সংসার— সব রয়েছে। কিন্তু পরিবারের কাছে তিনি ‘ব্রাত্য’। তাই আর বাঁচার ইচ্ছা নেই তাঁর। কাকদ্বীপের মহকুমাশাসকের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানালেন ৬০ বছরের এক বৃদ্ধা। তাঁর আর্তি, ‘‘আমি শান্তিতে মরতে চাই। আবেদন মঞ্জুর করুন।’’
৬০ বছরের জয়ন্তী দাসের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা থানা এলাকায়। বাড়িতে রয়েছেন স্বামী, পুত্র এবং পুত্রবধূ। এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বৃদ্ধার দাবি, তিনি অত্যাচারিত। স্বামী, পুত্র এবং পুত্রবধূ তাঁকে অত্যাচার করেন। তাই জীবনের প্রতি সমস্ত আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। সম্প্রতি কাকদ্বীপের মহকুমাশাসকের দফতরে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনপত্র জমা দেন জয়ন্তী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘স্বামী, ছেলে ও বৌমা মিলে দীর্ঘ দিন ধরে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে অত্যাচার করছেন। কখনও আমার পায়ে শিকল বেঁধে আটকে রাখে, কখনও মারধর করে ওরা। দু’বেলা খাবারও জোটে না।’’
ওই বৃদ্ধা এ-ও জানান, একাধিক বার পঞ্চায়েত, থানায় অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও কার্যকর পদক্ষেপ করেনি কেউ। উল্টে অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়েছে। অত্যাচারে বাড়ি ছাড়েন। কয়েক দিন পরে যখন আবার বাড়ি ফিরতে চান, তখন মারধর করে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এখন নিরুপায় হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ছোট মেয়ের কাছে। কিন্তু অনিশ্চয়তা তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছে। তাই মহকুমাশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, তাঁকে যেন স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দেওয়া হয়।
বৃদ্ধার এমন আবেদন এবং অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর স্বামী বা পুত্র কেউ কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তবে ছোট মেয়ে সুপ্রিয়া দাসের মন্তব্য, ‘‘মা আমার কাছে এসেছে। কিন্তু আমরা কত দিন কী ভাবে দেখব, কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ বৃদ্ধার এমন আবেদনের কথা কানে পৌঁছেছে কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক মধুসূদন মণ্ডলের। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’