মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে অশান্তির ঘটনার তদন্তে বড়সড় সাফল্য পেল জঙ্গিপুর জেলা পুলিশ। শমসেরগঞ্জ থানার শুলিতলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। মূলত এঁরাই অশান্তিতে ইন্ধন দেন বলে অভিযোগ। প্রায় দু’মাস খোঁজাখুঁজির পর বিশেষ সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে দু’জনকে পাকড়াও করল পুলিশ। অভিযোগ, ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় শমসেরগঞ্জের ধুলিয়ানও সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন এলাকা থেকে হামলাকারীদেরকে জড়ো করেছিলেন ওই দুই যুবক।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম কাইজ়ার শেখ এবং মোস্তাকিন শেখ। তাঁদের বাড়ি শুলিতলা গ্রামে। ধুলিয়ান পুরসভা এলাকা এবং নিউ ডাকবাংলা মোড় সংলগ্ন এলাকায় ট্র্যাফিক পুলিশের কিয়স্ক ভাঙচুর থেকে একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং দোকানে হামলা চালানোয় নেতৃত্ব দেন ওই দুই যুবক। গন্ডগোলের সময়ে দু’জনে নিউ ডাকবাংলো মোড় এলাকায় যান। তার পর ফোন করে করে বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবকদের জড়ো করেন এবং তাঁদের উত্তেজিত করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বাড়িঘরে ভাঙচুর চালান।
অশান্তির পরপরই দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল থানায়। তার পর থেকে তাঁরা পলাতক ছিলেন। রবিবার রাতে পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায় যে ওই দুই যুবক নিজেদের বাড়ি ফিরেছেন। সোমবার গভীর রাতে পুলিশ তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার পুলিশি হেফাজতের আবেদন করে ধৃতদের জঙ্গিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক ওই আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার অন্তর্গত রঘুনাথগঞ্জ, সুতি এবং শমসেরগঞ্জ থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি বড়সড় গন্ডগোলের ঘটনা ঘটে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় অশান্তির ঘটনাটি ঘটে শমসেরগঞ্জের জাফরাবাদে। সেখানে একসঙ্গে খুন হন বাবা-ছেলে। পাশাপাশি ধুলিয়ানেও অশান্তির আগুন ছড়িয়েছিল। অভিযোগ, কয়েকশো দোকান ভাঙচুর করা হয়। বাড়ি এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেন হামলাকারীরা। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার একটি সূত্রে খবর, শমসেরগঞ্জের অশান্তির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে অন্তত ৩০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দায়ের হয়েছে দেড়শটির বেশি মামলা। তার পাশাপাশি জাফরাবাদে বাবা-ছেলেকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত ১৩ জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে জঙ্গিপুর আদালতে চার্জশিটও জমা পড়েছে।