বসিরহাটে তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৮ জুন ২০২৫
তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে এবং গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি বসিরহাটের গোটরা পঞ্চায়েত এলাকার ঘোনা গ্রামের। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম আনার হোসেন গাজি (২৪)। সোমবার রাতের এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সাবির গাজি, বিল্লাহ শেখ, রবিউল সর্দার এবং বাকিবিল্লাহ মণ্ডল। ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান বলেন, ‘তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে বসিরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে তার মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। আশা করছি, বাকিদেরও খুব শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। ব্যক্তিগত শত্রুতা নাকি অন্য কোনও কারণ, সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে বাজারের চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন আনার। আচমকাই কয়েকটি বাইকে চেপে ১০ থেকে ১৫ জন দুষ্কৃতী দোকানে আসে। মুহূর্তের মধ্যে আনারকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে তাঁদের একজন। রক্তাক্ত অবস্থায় দোকানের সামনেই লুটিয়ে পড়েন আনার। অভিযোগ, এরপর তাঁকে কোপাতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। সেই সময় আশপাশ থেকে অনেকেই ছুটে আসেন। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মোটরবাইকে চেপে পালায় দুষ্কৃতীরা।
স্থানীয় বাসিন্দারাই আনারকে উদ্ধার করেন। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বসিরহাট হাসপাতালে। তবে হাসপাতালের চিকিৎসক আনারকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জমি সংক্রান্ত বিবাদের প্রসঙ্গ উঠে আসছে। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণেই খুন করা হয়েছে। আনার স্থানীয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর কোনও ব্যক্তিগত শত্রু সেভাবে ছিল না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বসিরহাট থানার পুলিশ।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সাদ্দাম হোসেন গাজি বলেন, ‘রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ একটি চায়ের দোকানে বসেছিলাম। সেই সময় আনার হোসেন গাজি ওই চায়ের দোকানের বাইরে বসেছিলেন। হঠাৎ তাঁর উপরে অতর্কিতে হামলা চালানো হয়। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির আওয়াজ হয়। পরবর্তীতে আনারকে কোপানো অবস্থায় উদ্ধার করি। কে বা কারা হামলা চালালেন, সেটা বুঝতে পারছি না। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল সেটাও জানা নেই। আনার তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী ছিলেন ও ব্যবসা করতেন।’
বসিরহাট তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বুরহানুল মুকাদ্দেম বলেন, ‘একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। পুলিশ তদন্ত করছে। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ মৃত যুবকের কাকা ফজের আলি গাজি বলেন, ‘আনার তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পুলিশকে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’