বাঙালির প্রিয় ডেস্টিনেশন হিসেবে বরাবরই পরিচিত দিঘা। সারাবছরই কমবেশি পর্যটকের আনাগোনা লেগেই থাকে দিঘায়। চলতি বছর থেকে পর্যটকদের কাছে বাড়তি আকর্ষণ দিঘার জগন্নাথ মন্দির। আবার সামনেই রথ। প্রথমবার রথের চাকা গড়াবে সৈকত শহরে। এই পরিস্থিতিতে হোটেল মালিক থেকে শুরু করে টোটোওয়ালা সকলেই ঝোপ বুঝে কোপ মারছে পর্যটকদের উপর। রাতারাতি ভাড়া বাড়িয়েছে বহু হোটেল কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই তৎপর হয়েছে প্রশাসন। প্রত্যেকটি হোটেলের সামনে বাধ্যতামূলক ভাবে ভাড়ার রেট ডিসপ্লে বোর্ডে ঝোলানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হোটেল মালিকদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বৈঠক হয়েছে। কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে হোটেলের ভাড়া নিয়ে। এমনকী প্রত্যেকটি হোটেলের সামনে ভাড়ার রেট ডিসপ্লে বোর্ডে ঝোলানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি একটি ফোন নম্বর চালু করার কথাও বলা হয়েছে। কোনও পর্যটক দিঘায় এসে ভাড়া নিয়ে হেনস্থার শিকার হলে সেই নম্বরে ফোন করে জানাতে পারবে।
পর্যটকদের অভিযোগ, জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের পর থেকেই হোটেল, যানবাহনের ভাড়া বেড়ে গিয়েছে অনেক। এমনকী পর্যটকদের থেকে খাবারেরও বাড়তি দাম নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ভিড়ের কারণে ঘর না পেয়ে সৈকতের ধারে বহু পর্যটক রাত কাটাচ্ছেন, আবার অনেকে ফিরে যাচ্ছেন। পর্যটকদের দাবি, ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার ঘরের জন্য চাওয়া হচ্ছিল দুই থেকে তিন হাজার টাকা। অভিযোগ পৌঁছে ছিল প্রশাসনের কাছে। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সভাপতি বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বড় হোটেলে ঘর ভাড়ার তালিকা সব সময় নির্দিষ্ট থাকে। কিন্তু ছোট হোটেলগুলিতে তা থাকে না। সেই কারণেই প্রশাসনিক ভাবে ঘর ভাড়ার তালিকা ঠিক করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া, নির্দেশ অনুযায়ী পর্যটক আসার পর তাঁদের নাম, ঠিকানা নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করতে হবে। যাঁরা নির্দেশ অমান্য করবেন, তাঁদের ৫০০ টাকা জরিমানা হবে।’
রামনগর-১ ব্লকের পদিমা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুশান্ত পাত্র বলেন, ‘দিঘার হোটেল ভাড়ায় স্বচ্ছতা আনতে আমরা সমস্ত হোটেলগুলিকে নোটিশ পাঠিয়েছি। সেই নোটিশে বলা হয়েছে, হোটেল ভাড়ার নির্দিষ্ট তালিকা গ্রাম পঞ্চায়েতে জমা করার পাশাপাশি হোটেলের সামনে টাঙাতে হবে। নিয়ম না মানলে কড়া ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’
দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের কার্য নির্বাহী আধিকারিক নিলাঞ্জন মণ্ডল বলেন, ‘পর্যটকদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে প্রতিনিয়ত একটি করে প্রতিনিধি দল হোটেল ভিজ়িট করছেন।’ জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘পর্যটকদের অভিযোগের ভিত্তিতে হোটেলগুলি বাড়টি ভাড়া যাতে না নেয় তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’