জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোর বদলি সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, নতুন জায়গায় কাজে যোগ না দিলেও অনিকেতের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না রাজ্য। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এই নির্দেশ দেন। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতকে এই বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন।
অনিকেত মাহাতো, দেবাশিস হালদার এবং আসফাকুল্লা নাইয়া, এই তিনজন জুনিয়র ডাক্তারদের পোস্টিং নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, কাউন্সেলিং না মেনে ‘পোস্টিং’ দিয়ে স্বাস্থ্য ভবন ‘অনৈতিক’ কাজ করেছে। ওই জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, যেহেতু তাঁরা আরজি ইস্যুতে প্রতিবাদের অন্যতম মুখ ছিলেন, তাই ‘ষড়যন্ত্র’ করে তাঁদের অবৈধভাবে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। এরপর তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। গত ৩০ মে দেবাশিস, আসফাকুল্লা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। পরে মামলা করেন অনিকেতও।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিং জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার এবং আসফাকুল্লা নাইয়ার পোস্টিং সংক্রান্ত মামলার শুনানি মুলতুবি রাখেন। বিচারপতি বলেন, ‘ওই বেঞ্চের মামলা শোনার এক্তিয়ার রয়েছে কি না, সেই বিষয়টি আগে খতিয়ে দেখা হবে।’ প্রসঙ্গত, দেবাশিসকে মালদহের গাজোল, আসফাকুল্লাকে হুগলির আরামবাগ এবং অনিকেতকে রায়গঞ্জে ‘পোস্টিং’ দেওয়া হয়েছে।
এদিনের শুনানিতে রাজ্যকে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু প্রশ্ন করেন, ‘তিন ডাক্তারের পোস্টিং নিয়ে সিদ্ধান্ত বা পদ্ধতির ন্যায্যতা প্রমাণ করবেন কীভাবে?’ সেই সঙ্গে তাঁর এও প্রশ্ন, ‘পোস্টিং কি মেধাভিত্তিক হয় নাকি যাকে যেখানে পছন্দ, সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়?’ দেবাশিস এবং আসফাকুল্লার মামলাতেও রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যে সেই রিপোর্ট দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। মঙ্গলবার ফের এই মামলার শুনানি হবে।
নিয়ম অনুযায়ী, সিনিয়র রেসিডেন্টদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষার পরে তিন বছরের ‘বন্ড’ থাকে। সেই বন্ড অনুযায়ী সরকারের তরফে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়। কাউন্সেলিংয়ের ভিত্তিতে গোটা বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়। যাঁদের নাম তালিকার উপরের দিকে থাকে, তাঁরা পছন্দমতো জায়গায় কাজ করার সুযোগ পান। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, ১৬০০ জনের মেধাতালিকায় কেবলমাত্র দেবাশিস হালদার, আসফাকুল্লা নাইয়া এবং অনিকেত মাহাতোর ক্ষেত্রে সেই প্রক্রিয়া মানা হয়নি।