'ফোন ধরছো না কেন?', রাগে তিন খুদে সন্তানের সামনেই স্ত্রীকে কোপালেন স্বামী, হাড়হিম হত্যাকাণ্ড মুর্শিদাবাদে...
আজকাল | ১৬ জুন ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সময় মতো স্ত্রী ফোন না তোলায় রাগের মাথায় তিন নাবালক সন্তানের সামনে তাঁকে কুপিয়ে খুন করলেন এক ব্যক্তি। হাড়হিম করা এই ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদের সুতি থানার অন্তর্গত আহিরন মাঠপাড়া এলাকায়। খুনের ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক। সুতি থানার পুলিশ মহিলার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১১ বছর আগে রেশমি বিবি (২৮) নামে এক মহিলার সঙ্গে আহিরণ মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দা মসিবুল শেখ নামে এক দিনমজুরের বিয়ে হয়। ওই দম্পতির ন'বছর, পাঁচ বছর এবং এক মাসের তিন সন্তান রয়েছে। মসিবুল দীর্ঘ সময় ধরে ওড়িশায় পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝেমধ্যেই ফোনে রেশমি বিবির সঙ্গে মসিবুলের ঝগড়া হতো। স্বামী-স্ত্রীর গণ্ডগোলের কারণে এবছরের ইদে মসিবুল গ্রামের বাড়িতে ফেরেননি। রবিবার গভীর রাতে কাউকে কিছু না জানিয়ে হঠাৎই তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন এবং স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি শুরু করেন।
সূত্রের খবর, সেই সময়ে রাগের মাথায় স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে, নিজের তিন সন্তানের সামনে কুপিয়ে খুন করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান মসিবুল। পাঁচ এবং ন'বছরের দুই সন্তান ঘটনাটি দেখতে পেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে মসিবুল তাদেরও খুন করার হুমকি দেন বলে অভিযোগ।
সুতি থানার এক আধিকারিক জানান, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে হেরোইনের নেশায় আসক্ত। রবিবার গভীর রাতে বাড়ি ফিরে এসে তিনি স্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু রেশমি বিবি নিজের তিন সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ার কারণে সময় মতো ফোনটি ধরতে পারেননি। এই কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। সেই সময়ে রাগের মাথায় ওই ব্যক্তি নিজের তিন সন্তানের সামনেই রেশমিকে কুপিয়ে খুন করেন।
মৃত ওই মহিলার বড় ছেলের সাকিরুল শেখ বলেন, 'আমার বাবা অন্য রাজ্যে কাজ করে। গতকাল অনেক রাতে হঠাৎই বাড়ি ফিরে এসে মাকে মারধর করতে থাকে। মায়ের উপর অত্যাচার হতে দেখে আমরা চিৎকার চেঁচামেচি করা শুরু করলে বাবা আমাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দেয়। সেই সময় হঠাৎই মাকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে বাড়ি থেকে বাবা পালিয়ে যায়।' মৃত ওই মহিলার দিদি নুরবানু বিবি বলেন, 'বাড়িতে তিন সন্তান থাকলেও আমার বোনের সংসার চালানোর জন্য মসিবুল কোনও টাকা পাঠাত না। আমার বোন বিড়ি বেঁধে তিন সন্তানকে নিয়ে সংসার চালাত। সোমবার সকালবেলা বাড়ির ভিতর থেকে বাচ্চাদের কান্নার আওয়াজ পেয়ে আমরা ছুটে যাই। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার বোনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি।'
সুতি থানার এক তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি রাত দু'টো নাগাদ খুনের ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত মসিবুল পলাতক। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।