• শিক্ষাক্ষেত্রেও কেন্দ্রের ‘বঞ্চনা’, বাংলায় স্মার্ট ক্লাসরুমের জন্য বকেয়া দেড় হাজার কোটি
    প্রতিদিন | ১৬ জুন ২০২৫
  • ধীমান রক্ষিত: কেন্দ্রের বঞ্চনার শিকার হচ্ছে রাজ্যের স্কুল পড়ুয়ারা। কেন্দ্রের কাছ থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা না পাওয়ার ফলে বাংলার স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্মার্ট ক্লাসরুম করা যাচ্ছে না। তবে অন্যান্য রাজ্যের স্কুলগুলি ঢালাওভাবে স্মার্ট ক্লাসের পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। কেন্দ্র টাকা না দেওয়ায় আগামী দিনে ডিজিটাল ও বাস্তবমুখী ক্লাসের ব্যবহার, প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল থেকে দেশের অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে বাংলার পড়ুয়ারা। সমগ্র শিক্ষা মিশন প্রকল্পের অর্থে সারা দেশেই তৈরি করা হয় স্মার্ট ক্লাসরুম।

    রাজ্যের সমগ্র শিক্ষা মিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “গত অর্থবর্ষে কেন্দ্রের কাছ থেকে খাতায় কলমে ৩৪২টি স্মার্ট ক্লাস করার অনুমোদন পেলেও রাজ্যে তৈরি হয়েছে মাত্র ১০০টি স্মার্ট ক্লাস। কেন্দ্র যত টাকা পাঠিয়েছিল, তা দিয়ে ওই ১০০টি স্মার্ট ক্লাস করা হয়েছে। এর মধ্যে অবশ্য রাজ্য সরকারের ৪০ শতাংশ অর্থও রয়েছে।” তিনি স্পষ্ট বলেন, “চলতি অর্থবর্ষে বাকি ২৪২টি স্মার্ট ক্লাস তৈরির জন্য কেন্দ্রের কাছে দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। কেন্দ্র এখনও সেই অনুমোদন করেনি। গত দু’বছরেও কেন্দ্রের কাছ থেকে কোনও টাকা আসেনি রাজ্যে।”

    রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা শুধু স্মার্ট ক্লাসের ক্ষেত্রেই নয়, মিড-ডে মিলের টাকা, আবাস যোজনার টাকা, ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না। রাজ্য সরকার নিজের অর্থ খরচ করে গরিব পরিবারগুলির জন্য আবাসের বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছে। মিড-ডে মিল, স্মার্ট ক্লাস তৈরির বকেয়া টাকা পাওয়ার জন্য বারবার বিকাশভবনের আধিকারিকরা কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছে। কিন্তু বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারকে বরাবরই উদাসীন থাকতে দেখা গিয়েছে।

    বিকাশভবনের এক আধিকারিক জানান, “পিএমশ্রী প্রকল্পের মধ্যে সমগ্র শিক্ষা মিশনকে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পিএমশ্রী প্রকল্পের সঙ্গে সমগ্র শিক্ষা মিশনের প্রকল্পের কোনও যোগাযোগই নেই। কারণ, সমগ্র শিক্ষা মিশন শুরু করা হয় প্রথম ২০০৩ সালে। অনেক আগে থেকে সমগ্র শিক্ষা মিশন পড়ুয়াদের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে।” বারবার দিল্লিতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে আধিকারিকদের। গত দু’বছর টাকা না পাওয়ার কারণে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ কী হবে তার উত্তর শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের কাছেও নেই। সমগ্র শিক্ষা মিশনে অন্তর্ভুক্ত স্মার্ট ক্লাস তৈরির জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারকে টাকা দিতে হয়। আগে কেন্দ্রের তরফে সমগ্র শিক্ষা মিশনের জন্য ৮০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করত। রাজ্য দিত ২০ শতাংশ টাকা। এখন কেন্দ্রের অনুপাত কমিয়ে ৬০ শতাংশ করা হয়েছে। ৪০ শতাংশ অর্থ রাজ্যকে খরচ করতে হয়। সমগ্র শিক্ষা মিশন প্রকল্পে বলা হয়েছে, প্রতিটি রাজ্যকে ব্লকে ব্লকে একটি করে উন্নতমানের মডেল স্কুল তৈরি করতে হবে। যেখানে স্মার্ট ক্লাস, ডিজিটাল ল্যাব, লাইব্রেরি-সহ উন্নতমানের পরিকাঠামো থাকবে। তবে দেশের বেশির ভাগ রাজ্যে কয়েকগুণ স্মার্ট ক্লাস তৈরি করা হলেও বাংলার পড়ুয়ারা মাত্র ১০০টি স্মার্ট ক্লাস রুমের সুযোগ পেয়েছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)