চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিকে না জানিয়ে বাড়িতে এসি লাগাচ্ছেন? কিংবা অনুমতি না নিয়েই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন? তা হলে এ বার সমস্যায় পড়তে পারেন। কারণ এই ধরনের গ্রাহকদের নোটিস দিয়ে ডেকে পাঠাচ্ছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কোচবিহার রিজওনাল অফিস।
দু’বার নোটিস দিয়ে ডাকার পর ও সংশ্লিষ্ট গ্রাহকরা না এলে একেবারে তাঁর বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে অতিরিক্ত বিল সংযুক্ত করে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় হইচই পড়ে গেছে কোচবিহারে।
ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে একটি সার্ভে করছে বণ্টন কোম্পানি। বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরেই কোচবিহারে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং হচ্ছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষজন। আবার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে।
এর ফলে সমস্যা যেমন বাড়ছে, পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে বিদ্যুৎ দপ্তর। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর বিষয় সামনে এসেছে দপ্তরের। বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত শহর এবং শহরতলি এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে অতিরিক্ত এসি ও কুলার লাগানোর ফলেই বিগড়ে যাচ্ছে ট্রান্সফরমার।
বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে কিছু এলাকায়। ৫০০ কিংবা ১ কিলো ওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা অনুযায়ী কানেকশন নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই বাড়িতে একটা থেকে তিনটে এসি লাগানো রয়েছে। আবার একতলা থেকে দোতলা বাড়ি করা হয়েছে। তার জন্য অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে।
কিন্তু সেই বিষয়গুলো বিদ্যুৎ দপ্তরে জানানো হয়নি। বাড়তি চাপে হচ্ছে লোডশেডিং। কিছু মানুষের জন্য গোটা এলাকার মানুষজন সমস্যায় পড়ছেন। এই বিষয়টি কত বাড়িতে এবং কোন, কোন এলাকায় রয়েছে সেই হিসেব তুলে আনতেই একটি সার্ভে করা হচ্ছে।
বাড়িতে বাড়িতে দপ্তরের যে সমস্ত কর্মীরা প্রতিমাসে রিডিং দেখে বিল দিয়ে আসেন, তাঁরা কোন সময় কতটা বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়েছে সেটা আলাদা করে নোটবন্দি করে নিয়ে আসছেন। সেই হিসেব জমা পড়ছে বিদ্যুৎ দপ্তরে।
এরপর যাঁদের বাড়িতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে তাঁদের নোটিস ধরানো হচ্ছে। পরপর দু’বার নোটিস করা হচ্ছে। এরপরও সংশ্লিষ্ট গ্রাহক বিদ্যুৎ দপ্তরে না এলে তাঁদের বিলের সঙ্গে অতিরিক্ত সর্বোচ্চ বিল যোগ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কোচবিহার রিজিওনাল ম্যানেজার বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘বাড়িতে যাঁরা এসি লাগাচ্ছেন তাঁদের বিদ্যুৎ দপ্তরে সেই বিষয়টি জানাতে হবে। না হলে সমস্যা হচ্ছে। অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। ফলে ক্ষতি হচ্ছে সবারই। যাঁরা না জানিয়ে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন তাঁদের নোটিস করা হচ্ছে।’