• কলকাতায় ৪০টি স্পর্শকাতর স্পট চিহ্নিত, বসছে ৮৫ সিসি ক্যামেরা, বড়বাজার-পোস্তায় লুটের কিনারায় পদক্ষেপ লালবাজারের
    বর্তমান | ১৬ জুন ২০২৫
  • স্বার্ণিক দাস, কলকাতা: কেস-১: ৫ মার্চ, ২০২৫। বড়বাজার থানা এলাকায় এক ব্যবসায়ীর অফিসে ঢুকে দুঃসাহসিক লুটের ঘটনা ঘটে। দিনেদুপুরে অফিসে ঢুকে ভয় দেখায় তিন দুষ্কৃতী। এরপর অফিসের আলমারি থেকে মোট সাড়ে ১৮ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা। 

    কেস-২: ৩১ মার্চ, ২০২৫। কটন স্ট্রিটে ফের লুটের ঘটনা। সিবিআই পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীর থেকে বহুমূল্যের সোনার চেন হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় ২০ জনের এক গ্যাং। প্রায় ৪০০ গ্রাম সোনার অলঙ্কায় লুট হয়। 

    একটি বা দু’টি ঘটনা নয়। শহরের ব্যস্ত বাণিজ্য এলাকা পোস্তা-বড়বাজারে এমন ঘটনা ঘটে আকছাড়। যা স্থানীয় থানা ও লালবাজারের চিন্তার অন্যতম কারণ। ব্যবসায়িক এলাকা হওয়ায় প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয় এই এলাকায়। সেই সুযোগে কখনও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সির পরিচয় দিয়ে হানা, আবার কখনও মূল্যবান অলঙ্কার নিয়ে যাওয়ার সময় টার্গেট করছে দুষ্কৃতীরা। তদন্তে নেমে বিপদে পড়ছে পুলিস। কারণ ভিড়ের মধ্যে নিমেষে মিলিয়ে যাচ্ছে অভিযুক্তরা। চিহ্নিত করা যাচ্ছে না তাদের। এর জেরেই এলাকায় বাড়তি নজরদারি চালাতে পদক্ষেপ নিয়েছে লালবাজার। চিহ্নিত করা হয়েছে পোস্তা ও বড়বাজার থানা এলাকার মোট ৪০টি স্পটকে। যেগুলিকে স্পর্শকাতর বলে মনে করছেন উর্দিধারীরা। সেই স্পটেই বসছে মোট ৮৫টি সিসি ক্যামেরা। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় ক্যামেরা ইনস্টলের কাজ হয়ে গিয়েছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর। 

    মার্চ মাসে পরপর একাধিক লুটের ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে লালবাজারের পদস্থ আধিকারিকরা। আরও বেশি সংখ্যায় ক্যামেরা বসানো নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) রূপেশ কুমার। এরপরেই বড়বাজার ও পোস্তা থানার অফিসার ইনচার্জকে স্পর্শকাতর পয়েন্ট চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেয় লালবাজার। সূত্রের খবর, মহাত্মা গান্ধী রোড, কটন স্ট্রিট, ক্যানিং স্ট্রিট, সোনাপট্টি সহ মোট ৪০টি স্পটকে চিহ্নিত করা হয়। লালবাজার জানিয়েছে, ৮৫টি ক্যামেরার মধ্যে পোস্তা থানা এলাকার ১৬টি জায়গায় ৫৩টি ইনস্টল করা হবে। এর জন্য খরচ হবে মোট ২০ লক্ষ টাকা। অন্যদিকে, বড়বাজারে সংখ্যাটা অপেক্ষাকৃত কম। ১৬টি জায়গায় মোট ৩২টি নতুন ক্যামেরা বসানো হবে। তাতে ১৭ লক্ষ টাকার বাজেট করেছে কলকাতা পুলিসের সদর দপ্তর।

    এ প্রসঙ্গে লালবাজারের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, পরপর ঘটনা ঘটায় ওই এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। বেশ কিছু অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে এই ক্যামেরাগুলিতে। সর্বোচ্চ ২১ দিনের ফুটেজ রাখা যাবে ক্যামেরার স্টোরেজে। তিনি বলেন, অতীতে দেখা গিয়েছে, এই এলাকায় বড় অঙ্কের লুটের ঘটনা ঘটে। এইসব ঘটনার তদন্ত করে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। সেকারণে থানার পাশাপাশি এইসব নতুন ক্যামেরার ফুটেজ দেখার জন্য গোয়েন্দা বিভাগকেও ‘লাইভ ফিড’ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)