• পুরুলিয়ায় সভাপতি বদল হলেই পার্টি অফিস বদলানোর রেওয়াজ অব্যাহত
    বর্তমান | ১৬ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: নতুন পার্টি অফিস উদ্বোধনের দিনেই উঠল ‘স্থায়ী’ পার্টি অফিসের দাবি। সৌমেন বেলথরিয়া জেলা সভাপতি থাকাকালীন পুরুলিয়া শহরের দেশবন্ধু রোডে জেলা তৃণমূলের পার্টি অফিস ছিল। তাঁকে সরিয়ে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজীব লোচন সোরেনকে। শহরের দুললি-নডিহাতে নতুন পার্টি অফিস ভাড়া নিয়েছেন রাজীব। রবিবার সেই কার্যালয়ের উদ্বোধন হয়। 

    রবিবার পার্টি অফিস উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে জেলা সভাপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলের চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাত, জেলার মহিলা সভানেত্রী সুমিতা সিং মল্ল, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জয় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষগণ, প্রতি ব্লকের সভাপতি সহ জেলা ও শহরের নেতারা। তবে, তাত্পর্যপূর্ণভাবে এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না প্রাক্তন জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া, প্রাক্তন বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া, জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। অবশ্য, রাজীব জেলা সভাপতি হওয়ার পর থেকে প্রায় সমস্ত দলীয় কর্মসূচিই এড়িয়েছেন সুজয়। এদিন নতুন পার্টি উদ্বোধনের দিনেই জেলা সভাপতির কাছে স্থায়ী জেলা পার্টি অফিসের দাবি জানান দলের কর্মীরা। জেলা সভাপতিকে লিখিত চিঠিও দেন পুরুলিয়া পুরসভার কাউন্সিলার বিভাসরঞ্জন দাস। বিভাস বলেন, মাসখানেক আগেই নতুন পার্টি অফিস তৈরি করেছে বিজেপি। আমরা রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছি। পুরুলিয়া পুরসভা থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ আমাদের দখলে রয়েছে। অথচ এতদিনে একটিও স্থায়ী পার্টি অফিস হল না কেন? নতুন পার্টি অফিস যাতে হয়, সেই দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছি জেলা সভাপতিকে। শহর সভাপতি প্রদীপ ডাগাও বলেন, জেলায় স্থায়ী পার্টি অফিসের দাবি দীর্ঘদিনের। এতদিন সেই দাবি পূরণ হয়নি। আশা করছি রাজীববাবুর হাত ধরেই সেই দাবি পূরণ হবে। প্রসঙ্গত, পুরুলিয়ায় যখন যে ক্ষমতায় এসেছে, তখনই জেলা পার্টি অফিসও বদল হয়েছে। দল প্রতিষ্ঠার কিছু বছরের মধ্যেই জেলা সভাপতির দায়িত্ব পান কেপি সিংদেও। নিজের বাড়ির বৈঠকখানা থেকেই দল পরিচালন করতেন কেপিবাবু। পাশাপাশি বিটি সরকার রোডে একটি দলীয় কার্যালয়ও খোলেন তিনি। ২০০৯ সালে তাঁকে সরিয়ে জেলা সভাপতি করা হয় শান্তিরাম মাহাতকে। তিনি দলীয় কার্যালয় সরিয়ে নিয়ে যান বাস স্ট্যান্ডের কাছে প্রয়াত নেতা সীতারাম মাহাতর বাসভবনে। ২০২০ সাল নাগাদ জেলা সভাপতি করা হয় গুরুপদ টুডুকে। নতুন কার্যালয় গড়ে ওঠে শহরের দুলমি এলাকায়। সৌমেন বেলথরিয়া জেলা সভাপতি হওয়ার পর দেশবন্ধু রোডে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে পার্টির কাজকর্ম চালাতেন। সৌমেনকে সরিয়ে রাজীবকে জেলা সভাপতি করার পর জেলা পার্টি অফিসও বদল হল। এনিয়ে রাজীববাবু বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার দিনই স্থায়ী পার্টি অফিস তৈরি ব্যাপারে দলের কর্মীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। অন্যান্য নেতারাও এ ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। এনিয়ে রাজ্যের সঙ্গেও কথ হয়েছে। আপাতত দুলমির এই পার্টি অফিস থেকে দল পরিচালনা করব। সামনের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদ নতুন পার্টি অফিস তৈরির কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।    
  • Link to this news (বর্তমান)