ন্যাকের মূল্যায়নে শিক্ষামহলে আলোড়ন, এ গ্রেড খুইয়ে অবনমন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের
বর্তমান | ১৬ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ছিল এ গ্রেড। অনেকেরই প্রত্যাশা ছিল, এবার ন্যাকের মূল্যায়নে এ প্লাস পাবে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু, স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে ছাত্রছাত্রী থেকে আধিকারিকদের। ন্যাকের মূল্যায়নে আরও পিছিয়ে গিয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। বি প্লাস প্লাস গ্রেড পেয়েছে দক্ষিণবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ এই বিশ্ববিদ্যালয়। অনেকে অবশ্য বলছেন, এটাই প্রত্যাশিত ছিল। সম্প্রতি এই বিশ্ববিদ্যালয় একাধিকবার বিতর্কে জড়িয়েছে। দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী ভিসির পদ ফাঁকা ছিল। কয়েকটি সেমেস্টারের ফলাফল সময়ে বের হয়নি। তা নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। পরে স্থায়ী ভিসি এলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো ততটা উন্নত হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ বাংলা বিভাগে ন্যাকের পরিদর্শকরা না যাওয়ায় বিতর্ক আরও জোরদার হয়েছে। বিভিন্ন কারণে ন্যাকের বিশ্লেষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবনমন হওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রেজিস্ট্রার অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা রিভিউতে যাচ্ছি। এক আধিকারিক বলেন, এটা অনেকটা পরীক্ষার ফলাফলের মতো। কোনও একটা ক্লাসে মেধাবী ছাত্রের ফল খারাপ হলে তার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না। পরের পরীক্ষায় নজরকাড়া ফলাফল করে সবাইকে চমকে দিতেই পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশকিছু সমস্যা আগে থেকেই ছিল। এটা মানতে অসুবিধা নেই। অনেকেই বলছেন, এখন ন্যাকের মূল্যায়ন না করালেই ভালো হতো। কিন্তু সেটা ঠিক নয়। জুনের মধ্যে মূল্যায়ন না করা গেলে নানা সমস্যা হতে পারত। এই মূল্যায়নে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। পরেরবার ভালো ফল হবেই। সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, একবছর আগে হওয়া একটি আর্থিক অনিয়মের বিষয় নিয়ে ইডি তদন্তে নেমেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতারকরা প্রায় দু’কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজনের নাম এই ঘটনায় জড়িয়ে গিয়েছে। একসময় এখানকার প্রতিটি বিভাগে পড়াশোনার মান যথেষ্ট উন্নত ছিল। চমকপ্রদ ফলাফল হতো। এখন সেই ধারাও বজায় নেই। তবে আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কয়েকটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করার প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এআইয়ের বিষয় চালু করারও আলোচনা শুরু হয়েছে। যেসব বিভাগ বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে রয়েছে সেগুলি চিহ্নিত করা হবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের আর এক আধিকারিক বলেন, সবকিছু ছেড়ে পড়াশোনার মান উন্নয়নে জোর দেওয়া উচিত। অভ্যন্তরে ‘লবি’র লড়াই রয়েছে। তারও অবসান হওয়া দরকার। এছাড়া সময়ে পরীক্ষা নেওয়া এবং ফলাফল বের করার টার্গেট নিতে হবে। এইসব কিছু ঠিকঠাক হলেই বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাবে। তা না হলে পরবর্তী মূল্যায়নে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় আরও পিছিয়ে পড়বে। এ প্লাস গ্রেড পাওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে।